গাছের গোড়ায় অ্যাসিড ঢেলে হত্যার চেষ্টা; নৃশংসতার সাক্ষী ব্যাঙ্গালোর

কর্ণাটকের রাজধানী ব্যাঙ্গালোর। ভারতের বাগিচানগরী নামেও পরিচিত এই শহর। অথচ এই নামের আড়ালেই লুকিয়ে অদ্ভুত প্রহসন। একদিকে যেমন গাছের জন্য গর্বের শেষ নেই শহরবাসীর, তেমনই আবার গাছের প্রতি ভালোবাসাও যেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। হয়তো বাড়ির সামনে একটি গাছ তাকে আড়াল করে রেখছে অথবা বাড়ির মধ্যে অজায়গায় পড়ে গিয়েছে সেই গাছ। এমনই তুচ্ছ কারণে মানুষ হাতে কুঠার তুলে নিচ্ছে। সত্যিই নামের সঙ্গে কী অদ্ভুত বৈপরীত্য এই শহরের।

সম্প্রতি তেমনই এক অমানবিক ঘটনায় চমকে উঠেছেন সকলে। কাদারেনাহালি বনশঙ্করী নামের এক ব্যক্তি এই ঘটনা সামনে নিয়ে আসেন। না, কেউ কুঠার দিয়ে গাছ কেটে ফেলেনি। বরং তার গোড়ায় ফুটো করে তার মধ্যে ঢেলে দিয়েছে অ্যাসিড। এর পর ধীরে ধীরে গাছটি মরে গেলে তাকে এমনিই সরিয়ে দেওয়া হবে। কেউ সেই আততায়ীকে গাছ কাটার জন্য দায়ী করবেন না। সত্যিই কী নিখুঁত পরিকল্পনা। শুধু একটি গাছকে হত্যার জন্য।

তবে এর মধ্যেই সেখানে পৌঁছে গেলেন বৃক্ষ-চিকিৎসক বিজয় নিশান্ত। তিনি জানেন মুমুর্ষু গাছকে কীভাবে বাঁচিয়ে তুলতে হয়। প্রথমেই সেই ফুটো পরিস্কার করে অ্যাসিড বের করে দিয়েছেন। এরপর জৈব ছত্রাক-প্রতিষেধক দিয়ে সেই ক্ষত ঢেকে দিয়েছেন। গাছটি যেহেতু যথেষ্ট পরিণত তাই এই যাত্রায় সেটা বেঁচে যাবে বলেই আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। তবে এরকম ঘটনা এই প্রথম নয়। এবছর এই নিয়ে এমন ৩টি ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিজয় নিশান্ত। তার মধ্যে একটি অপরিণত গাছকে কিছুতেই বাঁচানো যায়নি।

বিজয় নিশান্ত অবাক হয়ে বলেন, গাছকে ভালোবাসার অনুভূতি যেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে মানুষের মন থেকে। যদিও কিছু মানুষ এখনও প্রকৃতির মধ্যে বেঁচে থাকতে ভালোবাসেন। তাঁরাই এই পৃথিবীকে সবুজ সুন্দর করে রেখেছেন। তাঁরাই কর্ণাটকের নানা শহরে গাছ কেটে উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা দিয়ে আসছেন। ব্যাঙ্গালোর শহরেও এমন একটি প্রকল্প থমকে আছে। নাহলে এর মধ্যে আরও প্রায় ৩৩ হাজার গাছ কাটা পড়ত। প্রত্যেকেই যদি এইসব নির্বাক জীবের গুরুত্ব বুঝতে পারেন, তাহলে হয়তো পৃথিবীর চেহারাটা সত্যিই বদলে যাবে।

আরও পড়ুন
গাছকাটার এক বছর পরেও হয়নি বৃক্ষরোপণ, গোয়ার বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ ঘিরে বিতর্ক

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ম্যানগ্রোভ গাছেই রাখি বাঁধল পড়ুয়ারা, রাখি পূর্ণিমার ব্যাতিক্রমী ছবি সুন্দরবনে

Latest News See More