১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা পায়। পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে ‘বাংলাদেশ’। বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং জাতির জনক তিনিই। শেখ মুজিবুর রহমান। পরিচয় বঙ্গবন্ধু হিসাবেই। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত। ১৯৭৫ সালে, দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সপরিবারে হত্যা করা হয় তাঁকে। হত্যা করেন বাংলাদেশের কয়েকজন সেনাসদস্য। এই হত্যাকাণ্ডের পর কেটে গেছে সাড়ে চার দশক।
সোমবার ভোরে ঢাকায় ধরা পড়েন বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের অন্যতম একজন, আব্দুল মাজেদ। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষেই। এদিন দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ চালান বাংলাদেশ পুলিশের আধিকারিকেরা। জেরায় উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গত মাসের ১৬ তারিখে তিনি ঢাকায় ফিরেছেন খোদ কলকাতা থেকে। তাঁর থেকে পাওয়া যায় ভারতীয় পাসপোর্ট-ও। বাংলাদেশ পুলিশ জানায়, তিনি কলকাতাতেই লুকিয়ে ছিলেন প্রায় ২২ বছরের বেশি সময় ধরে।
পশ্চিমবঙ্গের আইবি’র কর্তারা জানান, মাজেদের গ্রেফতারের পরই কথা হয় বাংলাদেশের সঙ্গে। কিন্তু কলকাতায় তার বাসস্থান বা কার্যকলাপ সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি বিশেষ কিছু। তবে সন্দেহ করা হচ্ছে একাধিকবার ঠিকানা বদল করেছেন এই মুজিব-হত্যাকারী। এবং তা দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগণার মধ্যে। তবে কলকাতায় উনি একাই থাকতেন। স্ত্রী থাকেন বাংলাদেশেই। ছেলে বর্তমানে আমেরিকায়।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী সরকার ফিরে আসার পর তদন্ত শুরু হয়েছিল মুজিবুর হত্যাকাণ্ডের। তারপরই বেপাত্তা হন মাজিদসহ অন্যান্য খুনিরা। ২০০৯-এ বিচারের রায় প্রকাশিত হয়। ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্ট। ২০১০ সালে ফাঁসি হয় ৫ জনের। তবে মাজেদসহ বাকিরা গা-ঢাকা দিয়ে ছিলেন।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মাজেদ শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর হত্যায় নিযুক্ত ছিলেন না। জেলের মধ্যে আরও চার জাতীয় নেতার হত্যাতেও হাত ছিল তাঁর। ঢাকার সেন্ট্রাল জেলে রাখা হয়েছে তাঁকে।
তবে এখনও ধরা পড়েননি মুজিবুর হত্যাকাণ্ডের বাকি পাঁচ ঘাতক। তদন্ত চলছে তাদের খোঁজে। বাংলাদেশ পুলিশের আধিকারিকেরা আশাবাদী, তাঁদের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যেতে পারে মাজেদের থেকেই।