বলা হয়, শিশুরা ফুলের মত নিষ্পাপ। তাদের মুখ দেখে সমস্ত দুষ্টুমি মাফ করে নেওয়া যায়। অথচ এই মুখের সুবিধা নিয়েই একের পর এক খুন ও ডাকাতি করে যান জর্জ নেলসন ওরফে 'বেবি ফেস নেলসন' নামক এক ব্যক্তি।
জর্জ ছিলেন তিরিশের দশকে একজন দুর্ধর্ষ ডাকাত এবং খুনি। তাঁর মুখ ছিল শিশুর মত নিষ্পাপ, তাই তিনি ছিলেন সন্দেহের বাইরে। পরবর্তীতে তাঁর নাম দেওয়া হয় 'বেবি ফেস নেলসন'। এই নামেই সারা পৃথিবীর লোক তাঁকে চেনে।
মাত্র তেরো বছর বয়সে নেলসনের অপরাধ জীবন শুরু। ১৯৩১-এ ব্যাঙ্ক ডাকাতির জন্য নেলসনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের হেফাজত থেকে পলাতক নেলসন ফের ১৯৩৪ সালে জন ডিলিংগার এবং তাঁর সহকারীদের সঙ্গে নিয়ে ডাকাতি শুরু করেন।
মাত্র পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির লোকটির ওজন ছিল একশো তেত্রিশ পাউন্ড। দেখে মনে হত শিশু। তাই নেলসনকে ‘বেবি ফেস’ নামেই ডাকা হত।
১৯৩৪ সালে ডিলিংগরের সঙ্গে একত্রে উইসকনসিনে নেলসন লুকিয়ে ছিলেন। ধরা পড়ার সম্ভাবনা হলে, একজন এফবিআই এজেন্টকে গুলি করেন নেলসন। ইন্ডিয়ানার মার্চেন্ট ন্যাশনাল ব্যাংক-এ ডাকাতির অভিযোগেও অভিযুক্ত ছিলেন তাঁরা।
১৯৩৪-এর ২২ জুলাই ডিলিংগরকে হত্যা করে এফবিআই। এফবিআই-এর ডিরেক্টর এডগার হুভার নেলসনকে জনগণের এক নম্বর শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেন।
ডিলিংগরের মৃত্যুর পর, নেলসন সস্ত্রীক ক্যালিফোর্নিয়া চলে যান জন পল চেজের সঙ্গে। তাঁকে গ্রেফতার করতে গিয়ে এফবিআই-এর এজেন্ট হারমান ই হলিস এবং স্যামুয়েল পি কাউলি পারস্পরিক গুলি বিনিময়ে মারা যান। সতেরোটি বুলেটে আহত নেলসনকে সরিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হন তাঁর স্ত্রী হেলেন।
ওই বছরই ২৮ নভেম্বর পঁচিশ বছর বয়সে নেলসনের মৃত্যু হয়। ইলিনোয়ার সেন্ট পিটার ক্যাথলিক সিমেট্রিতে এই কুখ্যাত ব্যক্তিকে সমাধিস্থ করা হয়। তাঁর স্ত্রীকে এক বছরের জন্য জেলে রাখা হয়।
শিশুর মতো মুখ নিয়ে এরকম মুখোশ পরিহিত মানুষ হয়ত আজও ঘুরে বেড়াচ্ছে পৃথিবীর আনাচে-কানাচে।