দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে ক্রমাগত। গ্রাফ আরও বাড়ছে দিনে দিনে। ভিড় বাড়ছে হাসপাতালগুলিতেও। আর সেক্ষেত্রেই দরকার পড়ছে স্যানিটাইজারারের। রোগী এবং যে সকল চিকিৎসাকর্মী হাসপাতালে ঢুকছেন, তাঁদের স্যানিটাইজ করা প্রয়োজনীয় সতর্কতার মধ্যেই পড়ে। কিন্তু সকলের দিকে লক্ষ রাখা কি আদৌ সম্ভব হয়ে উঠছে? এই কথা মাথায় রেখেই তৈরি হল যন্ত্র। অটোমেটিক স্যানিটাইজার মেশিন।
তবে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, গবেষণাকেন্দ্রও না। মধ্যপ্রদেশের সাধারণ এক মেকানিক তৈরি করলেন এই যন্ত্র। নেহরু খান নামের ওই ব্যক্তি মধ্যপ্রদেশের মান্দসুর শহরের বাসিন্দা। শিক্ষাগত যোগ্যতা মাত্র ক্লাস টু পর্যন্ত। এবং অবাক করে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা সময় নিলেন যন্ত্রটি তৈরিতে। তাঁর এই আবিষ্কারে তাজ্জব গোটা স্বাস্থ্য দফতরসহ বিজ্ঞানী মহল।
যন্ত্রটি তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত, বলাই বাহুল্য। কেবলমাত্র তাই নয়। পুরোপুরি নিজের খরচে যন্ত্রটি বানালেন নেহরু খান। রেলস্টেশন এবং নানান অফিসের যেমন যাত্রীর সন্দেহজনক বস্তুর পরীক্ষণের জন্য স্ক্যানার থাকে। এই যন্ত্রটি অনেকটা সেরকমই। দৈর্ঘ্যে পাঁচ সাড়ে পাঁচ ফুট। প্রবেশ এবং প্রস্থানের দরজার মাঝেই রয়েছে ছোট্ট প্যাসেজ। তলায় পাটাতন। কোনো ব্যক্তি যন্ত্রে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই পাটাতনে চাপ সৃষ্টি হবে। চালু হয়ে যাবে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রটি। জ্বলে উঠবে আলো। মাঝের লম্বা জায়গাটিতে রয়েছে ছ’টি ফোয়ারা। পরিমাণমতো স্যানিটাইজার বেরিয়ে আসবে সেখান থেকেই। শুধু হাত তুলে সামান্য দাঁড়িয়ে থাকলেই চলবে।
প্রবেশ এবং প্রস্থানের মাঝের মাত্র ৩ সেকেন্ড সময়েই কাউকে স্যানিটাইজ করতে পারবে স্বয়ংক্রিয় এই যন্ত্র। অর্থাৎ মিনিটে অন্তত কুড়ি জনকে। রবিবার তিনি এই যন্ত্র দান করেন স্থানীয় ইন্দিরা গান্ধী জেলা হাসপাতালে। হাসপাতালের বাইরেই যন্ত্রটি লাগানো হয়েছে।
এদিন উপস্থিত ছিলেন জেলা শাসকও। তিনি ভূয়সী প্রশংসা করেন ওই ব্যক্তির। জানান, ডাক্তার, নার্স, কর্মচারী এবং অন্যান্য রোগীরা যখন হাসপাতালে ঢুকবে এবং বেরোবে, সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকবে না কোনো।
হাসপাতালে শুধুমাত্র করোনা-আক্রান্তরাই নন, যাতায়াত করেন অন্যান্য রোগীরাও। সেখানে এমন একটি যন্ত্রের উপস্থিতি সাহায্য করবে চিকিৎসকদেরও। বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার চাপ খানিকটা হলেও কমবে স্বাস্থ্যকর্মীদের।