পৃথিবীর প্রতিটা শহরেই এমন কিছু মানুষ আছেন, সবুজের মধ্যে যাঁরা পরম তৃপ্তি লাভ করেন। কিন্তু কংক্রিটের জঙ্গলে তার উপায় কোথায়? বাড়ির মধ্যে ছোটখাটো একটা বাগান যদিও অনেকেই করে থাকেন, কিন্তু বাড়ির মধ্যে কি একটা আস্ত জঙ্গল গড়ে তোলা যায়? মেলবোর্ন শহরের এক যুবক উত্তর দিচ্ছেন, হ্যাঁ সম্ভব। শুনতে অবাক লাগলেও প্রমাণ আছে তাঁর ঘরের মধ্যেই। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ সংগ্রহ করে তাদের আশ্রয় দিয়েছেন ঘরের মধ্যেই। এখন সেটাই একটা আস্ত বৃষ্টি অরণ্য।
মেলবোর্ন শহরের একজন আর্কিটেক্ট জ্যাসন চোগ। পেশাগত কারণে সারাদিন কংক্রিট নিয়ে কাজ করতে হলেও তাঁর আসল পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায় ঘরের মধ্যেই। জ্যাসনের কথায়, ছোটবেলা থেকে দাদু এবং মায়ের সঙ্গে বাগান তৈরির কাজে হাত লাগাতেন তিনি। কিন্তু এখন শহরের মধ্যে আর সেটুকুর অবকাশও নেই। অথচ গাছপালা এবং জন্তু-জানোয়ার ছাড়া তাঁর মন ভরতে চায় না। অবশেষে সমাধানের রাস্তা খুঁজে পেলেন। সমস্ত গাছ ঘরের মধ্যে বড় না হলেও, অনেক গাছের ক্ষেত্রে সেটা কোনো অসুবিধার বিষয় নয়। সেইসমস্ত গাছকে নিয়েই তাঁর জঙ্গল।
জ্যাসনের কথায়, শহর যখন ইঁট-কাঠ-পাথরে আমাদের গিলে খেতে চায়, তখন ঘরের মধ্যেই একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা খুঁজে নিতে হয়। আর এই চাহিদা তো শুধু তাঁর একার নয়। শহরে অনেক মানুষই সবুজের অভাব বোধ করেন। কিন্তু তাঁরা জানেন না কীভাবে ঘরের মধ্যে জঙ্গল গড়ে তোলা সম্ভব। তাই ২০১৬ সালে একটি কন্সালটেনসিও গড়ে তুলেছেন তিনি। নাম দিয়েছেন, ‘প্ল্যান্ট সোসাইটি’। পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্ত থেকেও সামাজিক মাধ্যমের সূত্রে মানুষ যোগাযোগ করেন তাঁর সঙ্গে। আমাদের শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য সবুজের প্রয়োজনের কথা তো চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন। সেই সুযোগ এনে দিলেন জ্যাসন চোগ। হয়তো আগামী দিনে এই উদ্যোগ বহু মানুষকে নিশ্চিত অসুস্থতার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে।
Powered by Froala Editor