মাকড়সার জালে ঢাকা একাধিক শহর, অবাক করা দৃশ্য অস্ট্রেলিয়ায়

গোটা শহরটা যেন মাকড়সার জালে ঢাকা। ঘরের দেয়ালে এরকম জাল দেখলে আমরা ঝুল বলি। কিন্তু জঙ্গলের সমস্ত গাছেদের ঢেকে, বিরাট বিরাট রাস্তার উপর দিয়ে চাঁদোয়ার মতো ছড়িয়ে থাকা মাকড়সার জালকে কী বলা যায়? অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমন দৃশ্যই দেখা গিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া প্রদেশে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠেছে সেই ছবি। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই ঘটনা নতুন নয়। প্রত্যেক বছরই শীতের সময়ে এমনটা দেখা যায় অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল অঞ্চলে। আর বিগত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টি এবং বন্যার ফলেই মাকড়সারা মাটি ছেড়ে উপরে উঠতে শুরু করেছে। আর এই জাল বিস্তারের পোশাকি নাম নাকি ‘বেলুনিং’।

ভারগ্র্যান্ট হান্টার নামে মাকড়সার এই প্রজাতি সাধারণত মাটির উপরেই ঘোরাফেরা করে। ঘাসের মধ্যে থাকা পোকামাকড় খেয়েই খিদে মেটায়। আর সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, এই প্রজাতির মাকড়সা কিন্তু জাল বুনতে পারে না। হ্যাঁ, বছরে কেবল একটিবারই তাদের লালা দিয়ে রেশমতন্তু তৈরি হয়, আর তাও একটিমাত্র তন্তু। কিন্তু একটিমাত্র তন্তু দিয়ে কি এত বড়ো জাল বোনা সম্ভব? বিশেষজ্ঞদের মতে, লক্ষ লক্ষ মাকড়সা একসঙ্গে এই জাল বুনেছে। প্রত্যেকের একটি করে তন্তু মিলেই তৈরি হয়েছে বিরাট চাদর। কোথাও কোথাও তা ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। আর তার মধ্যে অনায়াসে হেঁটেচলে বেড়াতে পারে সকলেই। ভারগ্র্যান্ট হান্টার মাকড়সারা যেন একতার নতুন এক শিক্ষা দিয়ে যায় তাদের এই কাজ দিয়ে।

এই ‘বেলুনিং’ মাকড়সারা বিষাক্ত নয় বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ইতিমধ্যে যথেষ্ট আতঙ্ক ছড়িয়েছে ভিক্টোরিয়া প্রদেশের গিপসল্যান্ড অঞ্চলে। বহু মানুষ আতঙ্কে ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন। কিছুদিন আগেই অস্ট্রেলিয়ায় ইঁদুরের উৎপাতের কথা ছড়িয়ে পড়েছিল। আর এবার মাকড়সার বাড়বাড়ন্ত। একের পর এক প্রাণীর এই আধিপত্য বিস্তারে যেন মানুষই ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। তবে ইতিমধ্যে বৃষ্টির জল নেমে যেতে শুরু করেছে বেশিরভাগ জায়গায়। আর তাই মাকড়সার এই জালও খুব তাড়াতাড়ি পাত্তারি গোটাবে বলে আশা করা যায়। মাথার উপরের চাঁদোয়া থেকে নেমে তারা আবার ঘুরে বেড়াবে সবুজ ঘাসের মধ্যে। তবে এই কিছুদিনের আশ্চর্য করা ছবিগুলো থেকে যাবে।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
মাকড়সার জাল থেকে ‘সুর’ উদ্ধার গবেষকদের

Latest News See More