প্রথমবারের জন্য রেকর্ড তৈরি হল অস্ট্রেলিয়ায়। পাঁচ মাস পর পুরোপুরি করোনামুক্ত হল অস্ট্রেলিয়া। শুক্রবার থেকে পর পর দু’দিন একটিও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা গেল না ওসিয়ানিয়ার বৃহত্তম দেশে। আবার ধীরে ধীরে পুরনো ছন্দে ফিরতে চলেছে অজিদের রাজ্য।
ভিক্টোরিয়া স্টেট অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম করোনাভাইরাসের এপিসেন্টারে পরিণত হয়েছিল কিছু মাস আগেই। গত ৯ জুন থেকে লাগু করা হয়েছিল ১১২ দিনের লকডাউন। অত্যন্ত জরুরি কাজ ছাড়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল বাইরে বেরনো। জারি করা হয়েছিল কার্ফিউও। বলা যায় বিশ্বের কঠিনতম লকডাউন প্রোটোকলের সাক্ষী থেকেছিল অস্ট্রেলিয়ার এই প্রদেশ। সুফল মিলল তারই।
রবিবার অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী গ্রেগ হান্ট ট্যুইট করে শুভেচ্ছা জানান নাগরিকদের। ধন্যবাদ জানান তাঁদের সহযোগিতার জন্য। ফ্রান্স, ইতালি, ইংল্যান্ডের মতো ইউরোপের উন্নত প্রথম সারির দেশগুলিতে দ্বিতীয়বারের জন্য আছড়ে পড়ছে সংক্রমণের ঢেউ। দ্বিতীয় পর্যায়ের লকডাউনের কথা ভাবছে সমগ্র ইউরোপ। ফ্রান্সে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে নাইট কার্ফিউ। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েই এক অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করল অস্ট্রেলিয়া।
মহামারীর শুরু থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৭৫০০ জন ব্যক্তি। মৃত্যুর সংখ্যা মাত্র ৯০০। তার মধ্যেই ভাইরাসের দৌরাত্ম্যকে বেঁধে ফেলল অস্ট্রেলিয়ার প্রশাসন। তবে করোনামুক্ত হওয়ার পরেও পালিত হচ্ছে চূড়ান্ত সতর্কতা। একবারেই উঠে যাচ্ছে না সমস্ত নিষেধাজ্ঞা। বরং আগামীকাল থেকে ধীরে ধীরে শিথিল করা হবে লকডাউনের নিয়মাবলী।
অস্ট্রেলিয়া যখন করোনামুক্ত হয়েও নিও-নর্মাল জীবনেই আটকে, তখন ভারতে স্বাভাবিক ছন্দে হাঁটছে জনজীবন। বহুদিন আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে আনলক পর্ব। শুরু হচ্ছে লোকাল ট্রেন পরিষেবাও। শিখরের থেকে সামান্য কমলেও দৈনিক সংক্রমণ দেশে ঘোরাফেরা করছে পঞ্চাশ হাজারের আশেপাশে। উৎসবের মরশুমের পর বাংলার অবস্থাও তথৈবচ। গত কয়েকদিন সংক্রমণ ৪ হাজার ছুঁই ছুঁই। কাজেই পরিস্থিতি যে নিয়ন্ত্রণে এসেছে, এমনটা একেবারেই নয়। তা সত্ত্বেও মাস্ক না পরেই রাস্তায় নামছে মানুষের ঢল। বাদুড়-ঝোলা ভিড় নিয়েই চলছে বাস। আর এ ব্যাপারে প্রশাসনের মানসিকতাও যথেষ্ট গা-ছাড়া।
বিজ্ঞানীরা আগে থেকেই সতর্কতা দিয়েছেন, শীতেই ভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে ভারতের। তবে প্রশাসন ও মানুষের সচেতনা নিয়ে থেকেই যাচ্ছে প্রশ্ন। তবে ভাইরাসের মোকাবিলায় অস্ট্রেলিয়ার দৃষ্টান্ত কি সত্যিই গ্রহণ করতে পারবে ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশ? যেখানে লকডাউনের সামনে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক মন্দা, অর্থনৈতিক কাঠামো। তবে মহামারীর রেশ টানার বিকল্প কোনো পদ্ধতির কথা কি সত্যিই ভেবেছেন দেশের কর্তারা? সন্দেহ থেকে যাচ্ছে সেই জায়গাতেই...
আরও পড়ুন
নভেম্বরের গোড়াতেই বাজারে অক্সফোর্ডের টিকা, বাড়ছে করোনা-মুক্ত দিনের আশা
Powered by Froala Editor