একসময় মঙ্গলগ্রহের বুকে প্রবাহিত হত নদী, প্রমাণ দিলেন বিজ্ঞানীরা

মঙ্গলগ্রহে অস্তিত্ব ছিল নদীর। প্রায় এক লক্ষ বছর ধরে মঙ্গলের বুকে বয়ে যাওয়া নদীর প্রমাণ পেলেন বিজ্ঞানীরা। সন্ধান মিলল ৬৫০ ফুট গভীর নদীখাতের। নদীখাতের গভীরতা এবং খাতের গায়ের দাগ থেকে বিজ্ঞানীদের ধারণা, নদীর গতিবেগ ছিল অনেকটাই বেশি। প্রায় সারাবছরই চলত নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ।

ইউট্রেক ইউনিভার্সিটির গবেষকরা, মঙ্গলের অরবাইটার-প্রেরিত হাই রেসোলিউশন ছবির বিশ্লেষণে জানালেন এই তথ্য। মঙ্গলের দক্ষিণ গোলার্ধে হেলাস অববাহিকার ইজোলা মেনসা অঞ্চলে রয়েছে এই নদীখাত। এই খাতের পাললিক শিলাই প্রমাণ করে নদীর অস্তিত্ব। তবে নদীর বয়ে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হল বায়ুমণ্ডলীয় চাপ। অর্থাৎ, মঙ্গলে উপস্থিত ছিল স্থায়ী বায়ুমণ্ডলও। এমনটাই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা।

তবে মঙ্গলের নদীটি গতিপথ পালটেছে ক্রমাগত। অনেকটা রাইন অথবা উত্তর ইতালির নদীগুলির মতো। তাই নদীপথের ক্ষয় দেখেই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না, ঠিক কতদিন আগে অবধি জারি ছিল প্রবাহ। অনুমান করা হচ্ছে প্রায় ৩৭ কোটি বছর আগেই থেমে গেছে এই নদী। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে প্রয়োজন আরও সূক্ষ্ম তথ্য।

স্বভাবতই একটি প্রশ্ন উঠে আসবে। এই নদীর উৎপত্তি তবে কোথায় ছিল? জিওলজিস্ট উইলিয়াম ম্যাকমাহনের এই গবেষণা প্রমাণ করে, মঙ্গলে বৃষ্টির মাধ্যমেই চলত নদীর প্রবাহ। সম্প্রতি নেচার পত্রিকায় প্রকাশিতও হয় ওই গবেষণাপত্র।

মঙ্গলগ্রহে আগেই পাওয়া গিয়েছিল হাইড্রোজেনের অস্তিত্ব। এবার মিলল নদীর সন্ধান। এর মধ্যেই মাথা চাড়া দিচ্ছে অন্য একটি রহস্য। প্রাণের রহস্য। জল এবং বায়ুমণ্ডলের উপস্থিতি থাকায় ৩৭ কোটি বছর আগে কি তবে প্রাণ ছিল মঙ্গলে? এই সম্ভাবনার কথাই উল্লেখ করেছেন ডঃ সালাসে। অন্যদিকে ম্যাসাচুসেট ইউনিভার্সিটির গবেষক সারা সিগার প্রমাণ দিয়েছেন, বায়ুমণ্ডলে ১০০ শতাংশ হাইড্রোজেনের উপস্থিতি সত্ত্বেও বাঁচতে পারে কিছু অণুজীব। কার্যত এই তথ্যের ভিত্তিতে একসময় প্রাণের উপকূল পরিবেশই ছিল মঙ্গলে। ধীরে ধীরে পাল্টে যায় পরিবেশ। কয়েক কোটি বছর আগের প্রাণের অনুসন্ধান করতেই নতুন উদ্যমে কাজে লাগছেন বিজ্ঞানীরা। চেষ্টা চলছে সেই রহস্যভেদের…

Latest News See More