আধুনিক প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের মাধ্যমে একের পর এক অদ্ভুত ছায়াপথের সন্ধান দিয়ে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি এমন আরও এক রহস্যময় ছায়াপথ সামনে এল তাঁদের দৌলতে। তবে ছায়াপথ বললে সামান্য ভুল হয়ে যাবে। আসলে এটি ছায়াপথেরই জীবাশ্ম। গ্রিক পৌরাণিক চরিত্র হেরাক্লাসের নামানুসারেই এই ছায়াপথের নামকরণ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
তবে এই ছায়াপথের অবস্থান শুনলেই চমকে উঠতে হয়। খোদ আকাশগঙ্গার মধ্যেই ভেসে বেড়াচ্ছে এই অদ্ভুত জীবাশ্ম ছায়াপথ। আকাশগঙ্গার বাইরের দিকের হ্যালো অংশের মেঘের মধ্যেই লুকিয়ে ছিল হেরাক্লাস। যার ফলে আকাশগঙ্গা নিয়ে সবথেকে বেশি গবেষণার পরও বিজ্ঞানীদের চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল এটি।
লিভারপুলের জন মুরস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জড়িয়ে ছিলেন এই গবেষণার সঙ্গে। অ্যাপাচি পয়েন্ট অবজারভেটরি থেকে ছায়আপথের বিবর্তন নিয়ে গবেষণা করছিলেন তাঁরা। সেখানে স্লোয়ান ডিজিটাল স্কাই সার্ভের তথ্য থেকেই জানা যায় এই লুকিয়ে থাকা ছায়াপথের অস্তিত্ব। অ্যাপোজি (APOGEE) যন্ত্রে ধরা পরে গ্যালাক্সি থেকে নির্গত ইনফ্রারেড আলো।
বিজ্ঞানীদের ধারণা আগে স্বতন্ত্র ছায়াপথ হিসাবেই বিরাজমান ছিল হেরোক্লাস। প্রায় ১০০০ কোটি বছর আগে আকাশগঙ্গার সঙ্গে সংঘর্ষ হয় হেরোক্লাসের। তারপর সংযুক্তিকরণ। তবে অন্যান্য ছায়াপথদের মতো প্রাথমিক পর্যায়ে ‘শান্ত’ ছিল না আকাশগঙ্গা। বরং চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলাই ছিল আকাশগঙ্গার মধ্যে। ফলে ধীরে ধীরে হেরোক্লাসের নক্ষত্রদের একাংশ ছড়িয়ে পড়ে আকাশগঙ্গায়। বর্তমানে এই ছায়াপথের আনুমানিক ভর আকাশগঙ্গার শুধুমাত্র হ্যালো অংশের এক তৃতীয়াংশ মাত্র।
তবে এই আবিষ্কারের মাধ্যমেই আকাশগঙ্গার বিবর্তন এবং ছায়াপথ সংযুক্তিকরণের সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্যই সামনে আসতে চলেছে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। সেইসঙ্গে আকাশগঙ্গার মধ্যে এমন আরও জীবাশ্ম ছায়াপথের অস্তিত্ব রয়েছে, সেই সম্ভাবনাও উস্কে দিল হেরোক্লাসের অস্তিত্ব। বুঝিয়ে দিল বিজ্ঞানের ধরাছোঁয়ার বাইরে এখনও হাজার রহস্য লুকিয়ে রেখেছে আমাদের ছায়াপথ...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
এভারেস্টের শিখরেও মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ, গবেষণার ফলাফলে আতঙ্কিত বিজ্ঞানীরা