ক্রমাগত শোচনীয় অবস্থা হচ্ছে অসমের। একটানা বৃষ্টিতে ভয়ঙ্কর রূপ নিল ব্রহ্মপুত্র। আর তার জেরেই গতকাল মৃত্যুর কবলে পড়লেন আরও ৯ জন মানুষ। যার ফলে সব মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ৮৫। রাজ্যের ৩৩টি জেলার মধ্যে ২৭টি জেলাই এখন বন্যার কবলে। দুর্দশার শিকার ৩৩ লক্ষ মানুষ।
২৭ জেলায় এখনও অবধি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ২৭৬৩টি গ্রাম। প্রায় এক লক্ষ হেক্টরের বেশি চাষের জমিই এখন জলের তলায়। নষ্ট হয়েছে কোটি টাকার শস্য। বন্যায় প্রায় ধুয়ে গেছে বারপেটা, ধুবরি, মোরিগাঁও, দক্ষিণ সালমারা জেলা। এই চার জেলা থেকেই শুধু বন্যার কবলে ১৫ লক্ষ মানুষ।
বন্যার জন্যে ধস নেমেছে বহু জায়গাতে। রাস্তায় রেনকাটের ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ, ব্রিজ এবং অন্যান্য সরকারি নির্মাণও। বন্যায় ভেসে গেছে কয়েক হাজার বাড়ি। অনেক বাড়িই আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা আর বাসযোগ্য নেই। অবস্থার মোকাবিলায় হাত লাগিয়েছে এনডিআরএফের জওয়ানরা। তৈরি হয়েছে ৪৮০টি ফ্লাড ক্যাম্প। এখনো অবধি ৬১ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে সেখানে।
বন্যার প্রভাব পড়েছে প্রাণীজগতেও। ৯৫ শতাংশ ডুবে যাওয়ায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন কাজিরাঙা। নিষিদ্ধ করা হয়েছে জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন ৩৭ নং জাতীয় সড়কের যান চলাচল। প্রাণ গেছে প্রায় ৫০টি বন্য প্রাণীর। উদ্ধার করা হয়েছে ৭০-এর বেশি জীবকে। পাশাপাশি প্রাণ বাঁচাতে মানুষের বাসস্থলে বাঘকে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে দু’ জায়গায়। এসবের মধ্যে বেড়েছে চোরাশিকারও। বন্যপ্রাণীর পাশাপাশি বিপন্ন ৮ লক্ষ পোষ্য প্রাণীও। ক্ষতি হয়েছে ৪ লক্ষেরও বেশি পোলট্রির।
রাজ্যের সঙ্গেই কেন্দ্রের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী কাজ চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারের। প্রশাসনের তরফে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলিতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ। তৎপর বনদপ্তরকর্মীরাও। কিন্তু তার পরেও আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে আরও প্রাণনাশের। পাশাপাশি সম্ভাবনা বাড়ছে ভাইরাসের সংক্রমণেরও। ভাইরাস এবং বন্যা এই দুইয়ের যাঁতাকলে সার্বিকভাবে বিধ্বস্ত অসমের পরিস্থিতি সত্যিই করুণ...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
২০২১-এর আগে করোনার ১০০% কার্যকর ভ্যাকসিন আবিষ্কার অসম্ভব, দাবি ফরাসি বিজ্ঞানীর