করোনা, তৈলখনিতে অগ্নিকাণ্ড, বন্যা - একের পর এক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত অসম

করোনার সংক্রমণ, তৈলখনিতে আগুন, আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু’র সংক্রমণ এবং সর্বোপরি বন্যা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাত লাগিয়েছে চিকিৎসক, বন-আধিকারিকরা। নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। তবুও এই বছর সংকট কাটছে না অসমের। মে-মাসে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ফুঁসে উঠেছিল ব্রহ্মপুত্র। জলস্তর বাড়ায় ভেসেছিল বিস্তীর্ণ অঞ্চল। মাস ঘুরতে না ঘুরতেই আবার প্রকৃতির রোষে শোচনীয় অবস্থা অসমের।

বিপন্ন প্রায় ২ লক্ষ ৩৫ হাজার মানুষ। সূত্রের খবর, মৃতের সংখ্যা এখনও অবধি ১০ জন। বন্যায় ভেসেছে অসমের মোট ১৬টি জেলা। ভয়ঙ্কর অবস্থা ধিমাজি জেলার। ক্ষয়ক্ষতির নিরিখে তারপরেই রয়েছে তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড় এবং মাজুলি। এছাড়াও লাখিমপুর, বিশ্বনাথ, বক্সা, কোকরাঝাড়, নলবাড়ি, নাগাঁও প্রভৃতি অঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র এবং অন্যান্য শাখানদীগুলির জলস্তর বিপদসীমার অনেকটাই ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ১২ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। অনেক জায়গাতেই জলের তোড়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছে যোগাযোগ। ভেঙেছে রাস্তা এবং নির্মাণকার্যও।

জরুরি তৎপরতায় কাজে হাত লাগিয়েছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। উদ্ধার করা হচ্ছে বাসস্থান হারানো মানুষদের। ইতিমধ্যেই ছ’টি জেলায় খোলা হয়েছে মোট ১৪২টি ফ্লাড শেলটার এবং ডিসট্রিবিউশন সেন্টার। আশ্রয় নিয়েছেন ১৮ হাজারের বেশি মানুষ।

তবে শুধু মানুষ না, বন্যার ফলে বিপর্যস্ত বন্যপ্রাণী এবং বনজ সম্পদও। পবিতোরা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রায় ৮০ শতাংশই নিমজ্জিত বন্যার জলে। মূলত বিপন্নপ্রায় এক-শৃঙ্গ গণ্ডার-সহ সেখানে বসবাস বন্য মহিষ, সিভেট ক্যাট, চিতা, বন্য শূকর এবং ভাল্লুকের। নিচু জলাভূমি হওয়ায় জলস্তর বৃদ্ধি পেয়ে সেখানে দেখা দিয়েছে বিপুল পরিমাণ বন্যপ্রাণ যাওয়ার আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই বনদপ্তরের আধিকারিকরা উদ্যোগ নিয়েছেন নানান উপায়ে প্রাণীগুলিকে নিকটবর্তী উঁচু অঞ্চলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার। সব মিলিয়ে, অসমের পরিস্থিতি যে যথেষ্টই বেগতিক, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Powered by Froala Editor

Latest News See More