ভারতবর্ষ বলতেই আজও অনেক ইউরোপীয়ের কাছেই বাঘ আর চিতার দেশ। তবে বাঘের সংখ্যাও কমছে রোজ। আর এশিয়াটিক চিতা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে আজ থেকে ৭০ বছর আগেই। কিন্তু আবারও মধ্যভারতের জঙ্গলে ফিরতে চলেছে চিতা। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে সবুজ সংকেতও পেয়েছে কেন্দ্র। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে ভারতের জঙ্গলে চিতা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া। এই বিষয়ে নামিবিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলাও শুরু হয়ে গিয়েছে।
বিড়াল শ্রেণীর অতিকায় প্রাণী চিতা। সাধারণ মানুষের কাছে তা যেমন আতঙ্কের ছিল, তেমনই ছিল একটা নিবিড় আন্তরিকতার সম্পর্কও। তবে ১৯৪৭ সালে, অর্থাৎ স্বাধীনতার বছরেই রাজা রামানুজ প্রতাপ সিং তিনটি চিতা শিকার করেন। আর এর পর থেকেই ভারতে এশিয়াটিক চিতার কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি। ১৯৫২ সালে এটিকে বিলুপ্ত প্রাণী বলে ঘোষণা করে ভারত সরকার।
এই ৭০ বছরে নানাভাবে শঙ্করায়নের মাধ্যমে এশিয়াটিক চিতাকে ফিরিয়ে আনার কথা ভেবেছে বনবিভাগ। শেষ পর্যন্ত বিশেষজ্ঞরা জানান, আফ্রিকান চিতাই ভারতের আবহাওয়ায় বসবাসের সবচেয়ে উপযোগী। ২০০৯ সালে আফ্রিকা থেকে চিতা সংগ্রহের পরিকল্পনা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এতদিন আইনি জটিলতার কারণে আটকে ছিল প্রক্রিয়া। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সবুজ সংকেত মিলল।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নামিবিয়া এবং সাউথ আফ্রিকা থেকে ভারতে আসবে বিশেষ প্রতিনিধি দল। তাঁরা আবারও খতিয়ে দেখবেন, এদেশের আবহাওয়ায় আদৌ আফ্রিকান চিতা বাঁচতে পারবে কিনা। তারপর তিন দেশের বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হলে তবেই আফ্রিকা থেকে চিতা-শাবক নিয়ে আসা হবে। অবশ্য ভারতের কোন কোন জঙ্গলে চিতা নিয়ে আসা হবে, সেটা এখনও স্পষ্ট করেনি সুপ্রিম কোর্ট। তবে মনে করা হচ্ছে এক্ষেত্রে ২০১০ সালের পরিকল্পনাই বহাল থাকবে। আর তাহলে মধ্য ভারতের ৬টি অভয়ারণ্যে ফিরবে চিতা। এর মধ্যে দুটি রাজস্থানে এবং ৪টি মধ্যপ্রদেশে। তবে আবার যেন কোনোভাবেই শিকারিদের কবলে পড়তে না হয় চিতাদের, সে-বিষয়ে কড়া নজর রাখা হবে বলেই জানিয়েছে বনদপ্তর।
আরও পড়ুন
গত দু’শতকে ভারত থেকে বিলুপ্ত ৯০ শতাংশ চিতাবাঘ, জানাচ্ছে বাঙালির ববেষণা
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
দাবি চামড়ার লোভে বিষ প্রয়োগে চিতাবাঘ হত্যা ছত্তিসগড়ে