ইংলিশ চ্যানেল, রটনেস্ট চ্যানেল, ক্যাটলিনা চ্যানেল— ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত প্রতি বছর একটি করে কঠিনতম চ্যানেল অতিক্রম করে নজির গড়েছিলেন তিনি। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে বঙ্গতনয়া সায়নী দাসকে (Sayani Das) নিয়েই। পরিকল্পনা ছিল, ২০২০ সালে নিজের কেরিয়ারের চতুর্থ মাইলস্টোন হিসাবে মলোকাই চ্যানেলজয়ের জন্য ঝাঁপাবেন তিনি। কিন্তু লকডাউনের কারণে ভেস্তে গিয়েছিল সমস্ত পরিকল্পনা, প্রস্তুতি। এবার মহামারীর প্রকোপ খানিক থিতু হতেই এবার ইতিহাস গড়লেন সায়নী। এশিয়ার প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসাবে জয় করলেন মলোকাই চ্যানেল (Molokai Channel)।
গত মাসের ২৯ মার্চই আমেরিকা পাড়ি দিয়েছিলেন কালনার তরুণী। কথা ছিল এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহেই শুরু হবে তাঁর এই অভিযান। যদিও শেষ অবধি বাধ সাধে আবহাওয়া। সামুদ্রিক হাওয়ার দাপট তো ছিলই, সেইসঙ্গে সামুদ্রিক ঢেউ-এর গড় উচ্চতা পৌঁছেছিল প্রায় ২ মিটারের কাছে। ফলে, নিরাপত্তার কথা ভেবেই অপেক্ষা করে যেতে হয় বেশ কয়েকটা দিন। অবশেষে ২৮ এপ্রিল, ভারতীয় সময়ানুযায়ী সকাল ১০টা নাগাদ মলোকাই চ্যানেলে নামেন সায়নী। টানা ১৯ ঘণ্টারও বেশি সময় লড়াই চলেছিল সমুদ্রস্রোতের সঙ্গে। ২৯ তারিখ ভোর ৬টা নাগাদ লক্ষ্যে পৌঁছান বঙ্গ-সাঁতারু। ভারতের জাতীয় পতাকা উড়িয়েই উদযাপন করেন এই আনন্দঘন মুহূর্ত।
তবে খুব কিছু সহজ ছিল না এই লড়াই। ২০১৯ সালে ক্যাটলিনা চ্যানেলজয়ের পর থেকেই শুরু হয়েছিল প্রস্তুতি। পুরির সমুদ্রে দিনে প্রায় ৫ ঘণ্টা সাঁতারের অনুশীলন করতেন সায়নী। কলকাতায় ফিরলে দিনে ১৫ ঘণ্টা কাটাতেন সুইমিং পুলে। কিন্তু লকডাউনের জেরে ছন্দপতন হয়েছিল তাঁর ফর্মের। ২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই গৃহবন্দি হয়ে পড়েছিলেন সায়নী। সম্পূর্ণভাবে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায় সাঁতারের থেকে। সেইসঙ্গে বড়োসড় আর্থিক ধাক্কার সম্মুখীনও হতে হয়েছিল তাঁকে। ততদিন যে সমস্ত আয়োজনই হয়ে গেছে মলোকাই অভিযানের।
সবমিলিয়ে তাঁর কাছে খুব একটা সুখকর ছিল না ২০২০ বছরটা। লকডাউন ও বিধিনিষেধ শিথিল হতে, আবার প্রথম থেকেই শুরু করতে হয়েছিল সবটা। শেষ পর্যন্ত এই সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়েই জয়ের মুখ দেখলেন তিনি। তৈরি করলেন এক নতুন ইতিহাস…
আরও পড়ুন
দৃষ্টিহীনদের জন্য বিশেষ রেডিও স্টেশন, ভারতে প্রথম
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
প্রকাশিত কিউএস র্যাঙ্কিং, বিশ্বের প্রথম ১০০-তে আইআইটি খড়গপুর