ভারতের অন্যতম হিন্দু ধর্মস্থান বৈষ্ণোদেবী। তিরুপতির পরেই এই মন্দির ভারতের দ্বিতীয় ধনী তীর্থস্থান। এই দুর্দিনে ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে এগিয়ে এল বৈষ্ণোদেবী মন্দির কর্তৃপক্ষ। পবিত্র রমজান মাসের ৫০০ জন মুসলমানের জন্য শেরি এবং ইফতারের আয়োজন করল তারা। জাতি, ধর্মের সমস্ত বেড়াজাল কাটিয়ে করোনার কঠিন সময়ে জ্বলে থাকল সম্প্রীতির আলো।
গত মার্চেই বৈষ্ণোদেবী মন্দিরের কাতরা অঞ্চলের আশীর্বাদ ভবনেই বানানো হয়েছিল কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। সেখানে ব্যবস্থা করা হয়েছিল ৫০০টি বেডের। করোনায় সম্ভাব্য আক্রান্তদের জন্য ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকার বন্দোবস্ত করেছিল আশীর্বাদ ভবন। সঙ্গে সারাদিনের খাবারের ব্যবস্থাও করেছিল মন্দির কর্তৃপক্ষ।
ইদানীং শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন এবং বাসে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফেরা শ্রমিকদের ভিড়ে ছেয়ে গেছে জম্মু-কাশ্মীর। যাঁদের অধিকাংশই মুসলমান। তাই এর মধ্যেই চলছে রমজানের উপবাস। কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে তাঁদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি সামনে ঈদের কথা মাথায় রেখেই, উদ্যোগ নিল মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দিরের চিফ এক্সিকিউটিভ রমেশ কুমার জানান, শ্রমিকদের জন্য তিনবেলার খাবার আয়োজন করা হয়েছে। রমজান উপলক্ষে ব্যবস্থা করা হচ্ছে প্রতিদিনের শেরী এবং ইফতারের। তবে এর মধ্যেও সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং বজায় রাখা হচ্ছে।
এছাড়াও ওই অঞ্চলের অন্যান্য কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলিতেও মন্দিরের তরফ ঠেকে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খাবার। এই মহামারীর মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই দেড় কোটি টাকা নানাভাবে দান করেছে বৈষ্ণদেবীর মন্দির। গত দু’মাসে দুঃস্থদের খাবার পৌঁছে দিয়েছে ৮০ লক্ষ টাকার।
তবে এই ঘটনা, পাশাপাশি হিন্দু-মুসলমানের কাঁধে কাঁধ রেখে লড়াই, যেন সম্প্রীতির অনন্য এক উদাহরণ। এমনটা সম্প্রীতির সুরই তো আমরা চেয়ে এসেছি প্রত্যেকে। চেয়েছি ‘ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু’। দেশের ঐক্য, সংস্কৃতি সেই ‘মানবতা’ ধর্মের কথাই তো শিখিয়ে এসেছে আমাদের।