দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় তরঙ্গে। কেন্দ্র ও রাজ্য স্তরের সমস্ত উদ্যোগ পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ। এই অবস্থায় এগিয়ে এলেন সেনাবাহিনীর চিকিৎসকরাই। ইতিমধ্যে আর্মড ফোর্স মেডিক্যাল কলেজের পক্ষ থেকে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আক্রান্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। এমনকি সমস্ত স্তরের চিকিৎসকদের সংগঠিত করে তাঁদের দেশের নানা প্রান্তে গিয়ে চিকিৎসার জন্য নোটিশ পাঠানো হয়েছে ইতিমধ্যে।
আর্মড ফোর্স মেডিক্যাল সার্ভিসের অফিসাররা ইতিমধ্যে প্রতিটি রাজ্য ও বিশেষভাবে বিপর্যস্ত অঞ্চলের মেডিক্যাল অফিসারদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনায় বসেছেন। আর এই আলোচনা থেকেই প্রাথমিক যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তা হল পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও বেশি চিকিৎসকের প্রয়োজন। তাই ইতিমধ্যে সীমান্ত অঞ্চল থেকে মেডিক্যাল অফিসারদের সরিয়ে এনে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নামার কথা জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এও বলা হয়েছে, তাঁরা একটানা ৩০-৩৫ দিন পর্যন্ত কর্তব্যরত অবস্থায় থাকবেন। তারপর একদিন করে বিশ্রাম নেবেন। পাশাপাশি তাঁদের যেন কোনো প্রশাসনিক কাজে সময় দিতে না হয়, তাও নিশ্চিত করা হবে। ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে মেডিক্যাল কোর্সের একটি সেসন। বহু নতুন চিকিৎসক যেমন এসেছেন, তেমনই বেশ কিছু অভিজ্ঞ চিকিৎসক অবসর নিয়েছেন। ফলে চিকিৎসকের অভাব থেকেই যাচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আর্মড ফোর্স মেডিক্যাল সার্ভসের কোনো অফিসারকেই ২০২১ সালে অবসর নিতে দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
চিকিৎসকের ঘাটতি মেটানোর পাশাপাশি হাসপাতালের শয্যা এবং অক্সিজেনের ঘাটতি মেটানোর বিষয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। ২০২০ সালেই দিল্লিতে ৫০০ শয্যার অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করেছিল সামরিক বাহিনী। ইতিমধ্যে আমেদাবাদ ও পাটনায় আরও দুটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত এএফএমএসের সমস্ত ইউনিট মিলিয়ে অক্সিজেন পরিষেবাযুক্ত শয্যার সংখ্যা ছিল ১৮২১। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সেই সংখ্যাটা বাড়িয়ে ৪২২০ করা হয়েছে। এখনও বেশ কয়েক জায়গায় অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরির কাজ চলছে। তার মধ্যে লক্ষ্ণৌ এবং বারাণসী হাসপাতাল চালু হয়ে যাবে এই সপ্তাহের মধ্যেই। এই দুই হাসপাতালে যথাক্রমে ৫০০টি ও ৯০০টি অক্সিজেন পরিষেবাযুক্ত শয্যা থাকবে। সেইসঙ্গে দিল্লির সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল হাসপাতালের শয্যা সংখ্যাও বাড়ানো হবে।
সেনাবাহিনীর কাজ যে শুধুই সীমান্তে বৈদেশিক শক্তির সঙ্গে যুদ্ধ করা নয়, বরং দেশের প্রতিটা প্রতিকূল অবস্থার মোকাবিলা করা, সে-কথাই প্রমাণ করছে এএফএমএসের এই তৎপরতা। প্রয়োজনের তুলনায় এই উদ্যোগও যথেষ্ট নয়। কিন্তু এর ফলে পরিস্থিতি যে অনেকটাই সামাল দেওয়া যাবে, সে-বিষয়ে আশাবাদী আধিকারিকরা
আরও পড়ুন
রক্তনালিতে 'বিষ' ছড়ায় করোনার স্পাইক প্রোটিন!
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গে বিপর্যস্ত নেপাল, আত্মসমর্পণ সরকারের