ইসরায়েলের জুডিয়া অঞ্চলের একটি মন্দির। খ্রিস্ট-ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এই পবিত্র মন্দিরে পা রেখেছিলেন স্বয়ং যিশুখ্রিস্ট। বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্টে উল্লেখিত রয়েছে, এই মন্দিরেই কিশোর অবস্থায় অধ্যায়ন করেছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে ধর্মপ্রচার ও তীর্থযাত্রার সময়ও তাঁর পদধূলি পেয়েছিল মন্দিরের প্রাঙ্গণ। এবার সেই ঐতিহাসিক মন্দিরের মেঝে এবং টাইলস নতুন করে তৈরি করলেন প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং রাজমিস্ত্রীরা।
তবে খুব কিছু সহজ ছিল না হারিয়ে যাওয়া ইতিহাসের এই অনুকরণ। মাস সাতেক আগে শুরু হয়েছিল উদ্ধারের কাজ। ইসরায়েলি প্রত্নতাত্ত্বিক আসাফ আব্রাহামের নেতৃত্বে গবেষণা শুরু করেছিলেন একটি বিশেষজ্ঞের দল। তাঁরাই ধর্মগ্রন্থ ঘেঁটে প্রাথমিকভাবে খুঁজে বার করেন মন্দিরের মেঝের বিষয় লিপিবদ্ধ যাবতীয় তথ্য। তাতে যে খুব কিছু কাজের কাজ হয়, এমনটা নয়। তবে জানা যায়, মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন হেরোড। রোমান আমলে জুডিয়ায় তৈরি অন্যান্য বিরাট সৌধগুলির মতোই অনেকটা গড়ন ছিল তার। পাশাপাশি এও জানা যায় বিভিন্ন জ্যামিতিক চিত্র অঙ্কিত ছিল সেই মেঝেতে।
এরপর সমসাময়িক সময় হেরোডের নির্মিত অন্যান্য সৌধগুলি নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা চালান তাঁরা। প্রতিটি সৌধের মেঝের নকশা ও ব্যবহৃত চিহ্নগুলির বিশ্লেষণ করে তৈরি করেন একটি ব্লু-প্রিন্ট। তারপর সেই ব্লু-প্রিন্ট অনুযায়ীই রাজমিস্ত্রিরা বাস্তবায়িত করে ঐতিহাসিক মন্দিরের মেঝের পুনর্নিমাণ। ব্যবহার করা হয় হাতের কারুকাজ করা চুনাপাথর, ডেড-সি’র পাথর এবং মার্বেল— তৎকালীন সময়ে যেসব উপকরণ দিয়ে তৈরি হয়েছিল হেরোডের নির্মাণগুলির মেঝে।
পুনর্নিমাণ আর পুনরুদ্ধারের মধ্যে বড়োসড়ো তফাৎ তো থেকেই যায়। কিন্তু নতুন করে ইতিহাসের আদলে এই মেঝের নির্মাণ আবেগাপ্লুত করে তুলেছে অনুরাগীদের। নবনির্মিত এই পাথরে যিশুর পা কোনোদিন না পড়লেও, তা বাড়িয়ে তুলেছে পবিত্র মন্দিরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব। আবেগতাড়িত করছে খ্রিস্ট-ধর্মাবলম্বীদের...
Powered by Froala Editor