ডিমের কথা বলতেই অনেকের হয়তো জিভে জল চলে আসবে। অনেকের মনে পড়বে পরীক্ষার দিনগুলোর কথা। কিন্তু ডিমেও যে শিল্প হয়, সেটা কী জানতেন? তাও আজ থেকে নয়, কয়েক হাজার বছর ধরে! ব্রিটিশ মিউজিয়ামে গেলে এরকম ‘ডিমের শিল্প’ দেখতে পাবেন। সেইসঙ্গে যে ইতিহাস জড়িয়ে আছে, সেটা নিয়েও গবেষণা করে আসছেন ঐতিহাসিকরা। আস্তে আস্তে হয়তো তাঁরা সেই ‘সূত্র’ খুঁজেও পাচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ব্যাপারটা খানিক খোলসা করা যাক। এই ‘ডিমের শিল্প’ ব্যাপারটি কী? কথাটা আরেকটু ভালোভাবে বললে, ডিমের খোসার ওপর শিল্প। প্রধান উপকরণ বা মাধ্যম হল উটপাখির ডিম। ভেতরের অংশ আলাদা রেখে, বাইরের খোলসটাকে যতটা সম্ভব অটুট রেখে তার ওপর নানা অলংকরণ করা। মূল ব্যাপারটা হল এটাই। কিন্তু আজকের দিনে এই কাজটি করার জন্য যা সামগ্রী বা পরিকাঠামো আছে, প্রায় ৫০০০ বছর আগে তেমনটা ছিল না। সেইসময় ডিম জোগাড় করাও কষ্টসাধ্য ছিল। কিন্তু কাজটি ভালোভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। কী করে, কেমন উপায় এই জিনিসটি চলে আসছিল, কীভাবে সমস্ত জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল, এই নিয়ে গবেষণা চলছে দীর্ঘদিন ধরে।
সম্প্রতি ‘অ্যান্টিকুইটি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এই বিষয়টাকেই কিছুটা ধরেছেন গবেষকরা। মূলত আফ্রিকার উত্তর অংশ আর মেডিটেরানিয়ান অঞ্চল উটপাখিদের আস্তানা ছিল। এখান থেকেই এই শিল্প ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপের অন্যত্র। ইতালি, সুদান, ইজিপ্ট, তুরস্ক-সহ নানা দেশে চলে যায় উটপাখি। তখন তো আর প্রতিপালন করার এত প্রচলন ছিল না। জঙ্গল থেকেই সেই ডিম সংগ্রহ করা হত। অবশ্য এই কাজ যে খুব সহজ ছিল, তা নয়। এই সমস্তটাই শুরু হয় আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর আগে। সেই উটপাখির ডিমের ওপরেই কারুকাজ করা হত। এখনও গবেষণা শেষ হয়নি। সম্পূর্ণ হলে, আরও চমকপ্রদ তথ্য পাওয়ার আশায় ঐতিহাসিকেরা।