বন্যা এবং চোরাশিকার। দুইয়ের জোড়া ফলায় ক্ষতবিক্ষত কাজিরাঙার বন্যপ্রাণ। অসমের ভয়ঙ্কর বন্যা পরিস্থিতি এখনও অবধি শতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়েছে রাজ্যের। শুধু মানুষই নয়, বিপন্নতার মুখে ঠেলে দিয়েছে কাজিরাঙার অন্যতম বন্যপ্রাণী বিলুপ্তপ্রায় একশৃঙ্গ গণ্ডারদের। বন্যায় মৃত্যু হয়েছে এখনও অবধি এই প্রজাতির ১৮টি প্রাণীর। উদ্ধার করা আরও দুটি গণ্ডারের চিকিৎসা চলছে বন দপ্তরে।
এরই মধ্যে আরও একটি ধাক্কা। শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ অসম বনবিভাগের নজরে আসে আরও একটি গণ্ডারের মৃতদেহ। খোদ গবরাইয়ের অ্যান্টি-পোচিং ক্যাম্পের নিকটেই আধিকারিকেরা উদ্ধার করেন এই মৃতদেহটি। রুটিন পেট্রোলিংয়ের সময় তাঁদের নজরে পড়ে ঘটনাটি। প্রাথমিকভাবেই ফুটে উঠছে চোরাশিকারের স্পষ্ট ছাপ।
মৃত মহিলা গণ্ডারটির মৃতদেহের কাছেই পাওয়া গেছে ছ’ রাউন্ড গুলির শেল। কার্তুজ দেখে বিশেষজ্ঞের ধারণা, ব্যবহার করা হয়েছিল পয়েন্ট থ্রি-ও-থ্রি রাইফেল। পাশাপাশিই চোরাশিকারিরা কেটে নিয়ে গেছে গণ্ডারটির খড়্গও। অ্যান্টি-পোচিং ক্যাম্পের কাছেই এমন নৃশংস ঘটনা ঘটে যাওয়ায় স্তম্ভিত বন দপ্তরের আধিকারিকেরা।
ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তদন্ত। ওই অঞ্চলে কাদা মাটিতে পায়ের ছাপ দেখেই চোরাশিকারিদের গতিবিধি ট্র্যাক করেন আধিকারিকেরা। ইতিমধ্যেই ধরা পড়েছে দলের একজন। সন্ধান চলছে বাকিদেরও। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কাজিরাঙা কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন
দক্ষিণ আফ্রিকায় গণ্ডার শিকার কমেছে ৫৩ শতাংশ, সুরক্ষিত হাতিরাও
এই বছরে দ্বিতীয়বার চোরাশিকারের সাক্ষী থাকল এই জাতীয় উদ্যান। এর আগে গত ৫ মে আরও একটি নৃশংস ঘটনা ঘটেছিল কাজিরাঙায়। কাজিরাঙার মূল আকর্ষনই হল এই একশৃঙ্গ গণ্ডার। বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের তালিকায় থাকা এই প্রজাতির সংখ্যাও এখন হাতে গোনা। প্রতি বছর বন্যার সময়ে চোরাশিকার ঘটনা বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে এই বছর লকডাউনে উপার্জনহীন হয়ে পড়ায় চোরাশিকার বাড়ার সম্ভাবনা ছিলই। সেই মত ব্যবস্থা নিয়েও রক্ষা পেল না এই বিরল প্রাণী। তার মধ্যেই বন্যাতে অনেকগুলি গণ্ডারকেই হারিয়েছে উদ্যান কর্তৃপক্ষ। মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এই হত্যাকাণ্ড আরও চিন্তা বাড়াল প্রশাসনের...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বন্যায় বিপর্যস্ত অসম, কাজিরাঙায় মৃত ৬টি বিরল একশৃঙ্গ গণ্ডার