ভারতীয় হাইকোর্টের প্রথম মহিলা বিচারক তিনি, লড়াই করেছেন নারীর অধিকার নিয়েও

জেন্ডার ইকুয়ালিটি। বাংলায় বলা যেতে পারে ‘লিঙ্গ সাম্য’। এই মুহূর্তে, এই একবিংশ শতকের পৃথিবীতে এই কথাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতে তো বটেই। নারী-পুরুষ দুজনকেই কাজের জায়গায় হোক, বা অন্য জায়গায়, সমানভাবে দেখতে হবে, এই হল দাবি। তবে এই দাবি আজকের নয়। বহু আগে থেকেই, অল্প সংখ্যায় হলেও, এই সমানাধিকারের ব্যাপারে সওয়াল করে গেছেন বেশ কিছু মানুষ। এমনকি, স্বাধীনতার আগে থেকেও। বিচারক আন্না চণ্ডী সেই মানুষগুলোর মধ্যেই অন্যতম। তাঁর পরিচয় শুধুমাত্র ভারতের হাইকোর্টের প্রথম মহিলা বিচারক হিসেবে নয়। বরং এই লিঙ্গ সাম্যের লড়াইয়েরও একটা বলিষ্ঠ মুখ তিনি।

১৯০৫ সালে তিরুবন্তপুরমে এক খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন আন্না। তাঁর এই লড়াইয়ের সাহস বোধহয় পরিবার থেকেই পেয়েছিলেন তিনি। বাবা মারা যান ছোট বয়সেই। মা-ই একা হাতে সংসার সামলেছিলেন। সেখান থেকেই পরবর্তীকালে জোর পান আন্না। এছাড়াও ছিল আরও একটি বিষয়। সেই সময় মহারানি সেথু লক্ষ্মীবাঈয়ের রাজত্ব ছিল সেখানে। নারীদেরও যে অধিকার আছে সমাজে, সেই কথাটাই আরও জোরদারভাবে প্রচলিত ছিল সেখানে। এমনই পরিবেশে বেড়ে উঠছিলেন আন্না চণ্ডী।

১৯২৬ সালে তিরুবন্তপুরমের সরকারি ল কলেজ থেকে আইনে স্নাতকোত্তর হন তিনি। উল্লেখ্য, তিনিই কেরালার প্রথম মহিলা ছিলেন যিনি আইন পাশ করেছিলেন। সেখান থেকে তাঁর যাত্রা শুরু হয়। বিধবা বিবাহ, নারীর অধিকার, সরকারি কাজে নারীদের অধিকার এই সমস্ত ব্যাপারে সওয়াল করেন তিনি। নিজের মতামত ব্যক্ত করেন প্রবলভাবে। পুরুষদের মতো, নারীরাও যাতে সমানভাবে কাজ করতে পারে, সেই চেষ্টাই করে গিয়েছিলেন তিনি।

স্বাধীনতার পরবর্তী সময়, ১৯৫৯ সালে কেরালা হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। ভারতের হাইকোর্টে তিনিই প্রথম মহিলা বিচারক ছিলেন। ১৯৯৬ সালে, ৯১ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগে অবধি চিন্তা করে গেছেন নারীর অধিকার নিয়ে। আজকে যে ফেমিনিজম গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, তার প্রথম দিককার মুখ হিসেবে অবশ্যই থেকে যাবেন আন্না চণ্ডী।

Latest News See More