কেরালা, দিল্লি হোক বা মহারাষ্ট্র; সাম্প্রতিক সময়ে আমরা বারবার সাক্ষী থেকেছি নিরীহ প্রাণীর সঙ্গে মানুষের অমানবিক আচরণে। সেটা খাবারের সঙ্গে আতসবাজি মিশিয়ে হত্যা করাই হোক অথবা চলন্ত গাড়ির সঙ্গে বেঁধে শহর ঘোরানো। আর এই অত্যাচারের তালিকায় রাস্তার কুকুর থেকে বনের হাতি, কেউই বাদ যায়নি। অথচ এই অপরাধের শাস্তি কী? কী বলছে আমাদের আইন। ১৯৬০ সালে শেষ সংশোধিত আইন অনুযায়ী এদেশে যে-কোনো পশুর সঙ্গে যেকোনো রকমের নৃশংস আচরণের শাস্তি ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা জরিমানা। হ্যাঁ, ভাবতে অবাক লাগলেও এখনও অবধি আমাদের দেশে এর থেকে কঠোর শাস্তির কোনো ব্যবস্থা নেই।
তবে এর মধ্যেই সাম্প্রতিক ঘটনা দেশজুড়ে যথেষ্ট সচেতনতার সৃষ্টি করেছে। কেরালার অন্তঃসত্ত্বা হাতির মৃত্যুর পর থেকেই অপরাধীর শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন নেটিজেনরা। সেইসঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলেও অনেক ছোটো ছোটো অপরাধের ঘটনাও উঠে আসতে থাকে। অনেক এলাকায় নাগরিক উদ্যোগে পশুপাখিদের সুরক্ষার জন্য সংগঠন গড়ে উঠতেও দেখা গিয়েছে। আর এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকারও প্রাণীদের বিরদ্ধে অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির আইন আনতে চলেছে বলে জানানো হয়েছে পশু সুরক্ষা মন্ত্রালয়ের তরফ থেকে।
পশু সুরক্ষার বিষয়ে সম্প্রতি মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে সমাজকর্মী থেকে শুরু করে মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যকেও। আর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল, এই সচেতনতার সময়েও ৬০ বছরের পুরনো আইন কীভাবে চলতে পারে? আর তাই প্রাণী বিষয়ক অপরাধ আইনের ১১(১) ধারায় সংশোধনী প্রস্তাব আনা হবে আগামী লোকসভা অদিবেশনেই। এই বিষয়ে পশু সুরক্ষা মন্ত্রী গিরিরাজ সিং-এর পাশে দাঁড়িয়েছেন অন্য সাংসদরাও। তবে ঠিক কী ধরনের শাস্তির ব্যনস্থা করা হবে সে বিষয়ে এখনও সঠিক কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে দীর্ঘদিনের চাহিদার পরিণতিতেই যে অবশেষে সংশোধনী আসতে চলেছে, তাতে খুশি প্রাণী সুরক্ষা কর্মীরাও।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কলকাতায় পশু নির্যাতন রুখতে উদ্যোগী সাহেব, ১৬০ বছর আগেই তৈরি করেছিলেন সংগঠন