প্রতিদিন আমাদের চারপাশে কত কত সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে, কত মানুষ ঘর বাঁধছে। কীভাবে তৈরি হয় সেসব সম্পর্ক? কীভাবে শুরু হয় পথচলা? ক্লাসের ফাঁকে চিরকুট বিনিময় বা ফিরতি পথে একটু চোখের ইশারা, এসব আজও চলছে। তবে আজকাল জীবনসঙ্গী খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে অনলাইন ডেটিং অ্যাপগুলোও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এইসব বৈদ্যুতিন মাধ্যমেই পছন্দের মানুষটিকে খুঁজে নিয়ে ঘর বাঁধছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু অনেকেই আবার এই অ্যাপগুলোতে ঠিক আকর্ষণ পান না। নতুন প্রেমের উষ্ণতাটাই যেন নেই। বড্ড যান্ত্রিক পুরোটা।
এমনটা যাঁরা মনে করেন তাঁদের জন্য থাকল এই অন্য মাধ্যমের গল্প। একটা গাছের কথা। এই গাছটিই খুঁজে দিতে পারে আপনার জীবনসঙ্গীকে। একশ বছরের বেশি সময় ধরে এই কাজটাই করে আসছে একটি ওক গাছ। নাম, ব্রাইডগ্রুম ওক ট্রি। জার্মানির বনের মধ্যে এই গাছটির আছে নিজস্ব পোস্টাল অ্যাড্রেস। প্রতি বছর ১০০০-এর বেশি চিঠি আসে এই গাছের ঠিকানায়।
গল্পের শুরু ১৮৯০ সালে। জার্মানির এক যুগল তাদের গোপন প্রেমের আদানপ্রদানের মাঝে জড়িয়ে নেয় ৬০০ বছরের পুরনো এই গাছটিকে। গাছের একটি গর্তে তারা একজন আরেকজনের জন্য চিঠি রেখে যেত। লোকমুখে সেই গল্প ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে। সেই যুগল ততদিনে তাদের গল্প শেষ করে পৃথিবীর সীমানা ছাড়িয়ে চলে গেছে। কিন্তু গাছটির জীবনে নতুন করে গল্প শুরু হল। বহু প্রেমিক-প্রেমিকা তাদের প্রিয় মানুষকে উদ্দেশ্য করে চিঠি রেখে যেতে থাকে এই গাছের কুঠুরিতে। ক্রমশ গাছটি যেন প্রবাদ হয়ে দাঁড়ায়।
১৯২৭ সাল থেকে এই গাছের নামে নিজস্ব পোস্টাল অ্যাড্রেস চালু করা হয়। চিঠি আসতে থাকে ডাকযোগে। পৃথিবীর নানা দেশ থেকে চিঠি আসে। আর প্রেরকরা নিজেরা সেই চিঠির উত্তর খুঁজতে আসে। অথবা পছন্দের চিঠি খুঁজে নিয়ে তার উত্তর দিতে শুরু করে। এভাবেই কথায় কথায় তৈরি হয় সম্পর্ক। এই গাছকে জড়িয়ে যেসব সম্পর্ক শুরু হয়, সেগুলো নাকি জীবনের শেষদিন অবধি টিকে থাকে। এ-ব্যাপারে নাকি গাছটির অলৌকিক ক্ষমতা আছে।
অলৌকিক ক্ষমতা সত্যিই আছে কি নেই, তা নিয়ে বিতর্ক বরং থাক। একটি গাছকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে সম্পর্ক, এই ঘটনাও কি কম অলৌকিক? গাছকে ‘ঘটক’ করে এমন কাহিনি কি কেউ কখনও শুনেছেন আগে? জানাবেন…