কুমির। ভয়ঙ্কর হিংস্র এই প্রাণীটি জলের বাসিন্দা হলেও প্রায়শই দেখা যায় নদী বা সমুদ্রের পাড়ে রোদ পোহাতে। জল খেতে আসা হরিণ, মহিষ এসব শিকার করলেও তার রাজত্ব স্থলভূমিতে সেভাবেই নেই। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিবর্তনের আগে কুমির হেঁটে বেড়াত স্থলেই। তাও ডাইনোসরের মত পিছনের দু’পায়ে ভর দিয়েই। সাম্প্রতিক গবেষণায় তেমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে।
ক্যুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রোমিলিও জানাচ্ছেন এই তথ্য। কিছুদিন আগেই খুঁজে পাওয়া একটি জীবাশ্মের পায়ের ছাপ বলছে, প্রাগৈতিহাসিক যুগে ডাউনোসরের মতই ছিল কুমিরের প্রকৃতি। দৈর্ঘে ৩ মিটার পর্যন্ত হত তাদের আয়তন। আর পায়ের ছাপের দৈর্ঘ ২৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। অর্থাৎ মানুষের পায়ের মতোই। দু’পায়ের মাঝের দূরত্বও অনেক সংকীর্ণ হত তাদের।
প্রাথমিকভাবে এই জীবাশ্ম থেকে রোমিলিও মনে করেছিলেন এটি হয়তো প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী টেরোসরের ছাপ। যার বসবাস ছিল জলাজমির কাছের কর্দমাক্ত নরম মাটি। কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁর ধারণা ভুল প্রমাণিত করে আরো কিছু তথ্য। কোরিয়ার সিঞ্জু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিয়ুং সো সিঞ্জু বিশ্লেষণ করলেন এই জীবাশ্মের সামনের পায়ের ছাপ না পাওয়ার কারণ।
জীবাশ্মটির বয়স আনুমানিক ১১-১২ কোটি বছর। খুঁজে পাওয়া গেছে দক্ষিণ কোরিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে। তবে এশিয়ায় এই জীবাশ্ম বেশ বিরল। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, কীভাবে এই কুমির বিবর্তিত হয়ে চার পায়ে হাঁটা প্রাণীতে পরিণত হল। এখনো অবধি তার নির্দিষ্ট কোনো বিবর্তনের ধারা তৈরি করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। গবেষণা চলছে সে ব্যাপারেই। তবে এই বিবর্তনে, কুমিরের জলে অভিযোজনে স্থলের আতঙ্ক খানিকটা হলেও কম এখন। এ কথা তো বলতেই হচ্ছে।
আরও পড়ুন
ডাইনোসরের আমলেই বাস করত এই শিকারী স্তন্যপায়ী, 'অদ্ভুত জানোয়ার'কে ঘিরে রহস্য
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
১৯৩৬ সালেই মৃত পৃথিবীর শেষ তাসমিনিয়ান টাইগার, পুরনো ভিডিও উদ্ধার