প্রতিদিন শতাধিক দুঃস্থ শিশুকে খাওয়ান ক্যানসার আক্রান্ত এই মানুষটি

পথশিশুদের আমরা অনেকেই সাহায্য করে থাকি। টাকাপয়সা দিয়ে হোক, বা খাবার দিয়ে। খুব দুর্লভ ঘটনা নয় এটি। সাহায্য করেন আঁচল শর্মাও। তবে তাঁর গল্পটা আমাদের সবার থেকে আলাদা।

ক্যানসার আক্রান্ত আঁচল এখন দিল্লির রংপুরি বস্তির বাচ্চাদের কাছে সুপার হিরো। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া আঁচল ও তাঁর ভাই আর্থিক কারণে অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে পড়ার সময়েই স্কুল ছাড়তে বাধ্য হন। পারিবারিক সহিংসতা দেখে বড় হওয়া আঁচলের জীবনে কম বিপর্যয় আসেনি। বোন তাঁর প্রিয় মানুষের সঙ্গে বিয়ে করে সুখী হতে চেয়েছিল। পরিবারের কেউই মানেনি। কিন্তু আঁচল মেনেছিলেন। বিয়েও দিয়েছিলেন তাঁদের। কিন্তু পাঁচ মাস পর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় বোনের। ক্যানসারের বিরুদ্ধে যেমন লড়াই করছেন, তেমন এখানেও লড়াই করেছেন আঁচল। দোষী পেয়েছে তার যোগ্য সাজা। আঁচলের নিজের বিবাহও সুখের হয়নি। বেরিয়ে এসেছেন সেই সম্পর্ক থেকে।

রিসেপশনিস্টের কাজ থেকে শুরু করে আজ তিনি একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির ব্রোকার। নিজের মা বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন ভাড়ার একটি ফ্ল্যাটে। বাবা যক্ষ্মার রোগী। মায়ের রয়েছে মস্তিষ্কের রোগ। নিজে ভুগছেন ব্রেস্ট ক্যানসারের তৃতীয় স্টেজে। তারপরেও চালিয়ে যাচ্ছেন ‘মিলস অফ হ্যাপিনেস’- তাঁর এনজিও। প্রতিদিন খাওয়ান ১০০-র বেশি শিশুকে।

সিনেমা বা গল্পের বইয়ের সুপারহিরোর চেয়ে কম নন আঁচল। বরং তার চেয়ে বেশি কিছু। অন্যরা অনেকেই যখন জীবনযুদ্ধে হার মেনে আত্মহত্যা করছে, আঁচল তখন আমাদের প্রেরণা।