আমফানের তাণ্ডবও আঁচড় কাটতে পারেনি শতাব্দীপ্রাচীন টালা ট্যাঙ্কের গায়ে

আমফানের জেরে লণ্ডভণ্ড দক্ষিণবঙ্গ। বাদ যায়নি শহর কলকাতাও। এখনও ইতিউতি ছড়িয়ে আছে ধ্বংসের চিহ্ন। হেলে পড়েছে গাছ; বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে এসেছে। পুরনো অনেক বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত। তবে এই ধ্বংসস্তূপের ভেতরেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ১১১ বছরের প্রাচীন একটি স্থাপত্য। স্থাপত্য কম, কলকাতাবাসীর দৈনন্দিন প্রয়োজনের সঙ্গী হয়ে গেছে সে। আমাদের টালা ট্যাঙ্ক। আমফানের শক্তিশালী প্রকোপও তার গায়ে আঁচড়ও লাগাতে পারেনি। একইভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে সে।


১৯০৯ সালে ব্রিটিশরা তৈরি করেছিল এই ট্যাঙ্ক। তখন থেকেই যাত্রা শুরু হয়েছিল। টালার ট্যাঙ্ক এশিয়ার সবচেয়ে বড়ো রিজার্ভার। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচুও বটে (১১০ ফুট)। বিশাল লোহার ট্যাঙ্ক, সঙ্গে জুড়ে আছে স্টিলের পাত। যেন নিজেই এক দৈত্য। এখন অবশ্য একটু মেরামত চলছে। জল পরিষেবা অক্ষুণ্ণ রেখেও চলছে সেই কাজ। আর বিশেষজ্ঞদের চিন্তা ছিল সেখানেই। একেই এত পুরনো, তার ওপর সংস্কার চলছে— সুপার সাইক্লোনের সামনে টালা ট্যাঙ্ক দাঁড়াতে পারবে তো? 


কিন্তু সব জল্পনা উড়িয়ে টিকে গেল কলকাতার অন্যতম প্রধান গর্ব। তার কারণ, ঝড়ের সময় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন জায়গায় জল সরবরাহ। ফলে, অন্যান্য দিনের তুলনায় জলস্তর খানিক বেশি ছিল। আর সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায়, জলস্তর কমেনি বিশেষ। এ-কারণেই, ট্যাঙ্কের ওজন খানিক বেশি ছিল। আমফান কোনো আঁচড়ই ফেলতে পারল না টালার ট্যাঙ্কের গায়ে। এই জিনিসটা না হলে কলকাতার বিপদ যে আরও বহুগুণ বাড়ত, তাতে সন্দেহ নেই। আর এই কৃতিত্বের অনেকাংশই যে জল সরবরাহ বিভাগ ও কলকাতা পুরসভার কর্মীদের, তা নিয়ে কোনো সন্দেহই নেই।

Powered by Froala Editor