জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির আরও একটি বটগাছ বিদায় নিল রবিবার সকালেই। প্রয়াত হলে অবনীন্দ্রনাথ দৌহিত্র অমিতেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনিই ছিলেন ঠাকুরবাড়ির সবচেয়ে বরিষ্ঠ অভিভাবক। অবশ্য তার বাইরেও তাঁর অন্যতম পরিচয় চিনা ভাষাবিদ হিসাবেই। অমিতেন্দ্রনাথের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে শেষ হল বাঙালির চিনা ভাষাচর্চার একটি অধ্যায়ও।
বাবা অলোকেন্দ্রনাথ ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জ্যেষ্ঠ পুত্র। মা পারুলদেবী দেবেন্দ্রনাথ-কন্যা সৌদামিনীর দৌহিত্রী। তাঁদের জ্যেষ্ঠ পুত্র অমিতেন্দ্রনাথ ঠাকুরবাড়ির সংস্কৃতিচর্চায় যোগ করেছিলেন একটি আলাদা মাত্রা। আর সেটি হল চিনা ভাষার চর্চা। চিনা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন লাওৎসে-র লেখা ‘তাও-তে-চিং’ নিয়ে তাঁর গবেষণা ও বঙ্গানুবাদ এক দিকচিহ্ন হিসাবে গণ্য করা হয়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও মিশিগান ইউনিভার্সিটির পাশাপাশি ভারতের ন্যাশানাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতেও চিনা ভাষা বিষয়ে অধ্যাপনা করেছেন অমিতেন্দ্রনাথ।
চিনা ভাষা-সাহিত্য সম্পর্কে গবেষণার পাশাপাশি বাংলা ভাষায় চিনের গল্প-কবিতা অনুবাদও করেছেন অমিতেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ৯০-এর কোঠা পেরিয়ে গেলেও তাঁর কাজের উদ্যমে ভাঁটা পড়েনি কখনও। ৯৮ বছরের অমিতেন্দ্রনাথের মৃত্যুও তাই যেন এক আকস্মিক দুঃসংবাদ। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিজেকে লিপ্ত রেখেছিলেন গবেষণার কাজে। অমিতেন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরেও সেইসব গবেষণা বাঙালির কৃষ্টিচর্চার মাণদণ্ড হয়ে থেকে যাবে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ঘুমে আচ্ছন্ন ঠাকুরবাড়ি, গভীর রাতে স্ত্রী-র পাশে বন্ধুকে এনে বসালেন সত্যেন্দ্রনাথ