যুদ্ধের আতঙ্কে ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন বহু মানুষ। কয়েকটিমাত্র পরিবার আটকে পড়েছে। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে সরকারের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সশস্ত্র মোকাবিলা। ফলে এখন ভিটেমাটি আঁকড়ে ধরে কোনোরকমে বেঁচে থাকা ছাড়া উপায় নেই। চাষ-আবাদ নেই। নেই খাবারের কোনো বন্দোবস্ত। ইথিওপিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে জাতিপুঞ্জও। বৃহস্পতিবার ইউনেস্কোর তরফ থেকে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়, ইথিওপিয়ার টাইগ্রে অঞ্চলে অন্তত ৩৩ হাজার শিশু প্রবল খাদ্য সংকটের মধ্যে রয়েছে। অবিলম্বে ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা করা না গেলে তাদের প্রত্যেকের মৃত্যু ঘটতে পারে।
গতবছর নভেম্বর মাসে ইথিওপিয়া সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভ্যুত্থানের ডাক দেয় এরিথ্রিয়ান ট্রুপস। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে অন্তত ১৭ লক্ষ মানুষ বাড়ি ছেড়ে চলে যান। পড়ে থাকেন মাত্র সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষ। তাঁরাও যেন নিজেদের বাসভূমিতেই উদ্বাস্তু হয়ে দিন কাটাতে থাকেন। এর মধ্যে ইউরোপ এবং আমেরিকার বেশ কিছু দেশ ও সংগঠন থেকে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে কিছুই সম্ভব হয়নি। অবশেষে তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় হস্তক্ষেপ করতে চলেছে জাতিপুঞ্জ।
যদিও জাতিপুঞ্জের সমীক্ষা একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছে ইথিওপিয়া সরকার। সরকারের মতে, ইতিমধ্যে যথেষ্ট সরকারি সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বিপন্ন মানুষদের কাছে। পাশাপাশি এরিথ্রিয়ান ট্রুপসও অস্ত্র সমর্পনে বাধ্য হয়েছে। ফলে এখন আর যুদ্ধের ভয়াবহতা নেই। পাশাপাশি দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা একেবারেই ভিত্তিহীন বলে মনে করছে ইথিওপিয়া সরকার। অন্যদিকে ইউনেস্কোর বক্তব্য, সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষের খাদ্যাভাবকে প্রচলিত অর্থে দুর্ভিক্ষের তকমা দেওয়া হয় না। কিন্তু এখন পরিভাষার সংজ্ঞা নিয়ে বিতর্কের সময় নয়। ৩৩ হাজার শিশুর জীবনের মূল্য দিতে না পারলে ইতিহাস কাউকেই ক্ষমা করবে না। এই পারস্পরিক চাপান-উতোর কাটিয়ে সমস্ত স্তর থেকে মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় সাহায্য পৌঁছে দেওয়াই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
চরম দুর্ভিক্ষের শিকার কঙ্গোর এক-তৃতীয়াংশ মানুষ, রিপোর্ট প্রকাশ জাতিসংঘের