জঙ্গলের পরিচর্যার জন্য কেটে ফেলতে হয় বেশ কিছু গাছকে। বাকি গাছদের বেঁচে থাকার জন্যই তাদের সরে যেতে হয়, নাহলে সে নিজেও অরণ্যের পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারবে না। কিন্তু এইসমস্ত গাছদের অন্য পরিবেশে লাগানো যেতেই পারে। তবে তেমনটা ভেবে দেখেন না অনেকেই। নেদারল্যান্ডসের আস্টারডাম (Amsterdam) শহরে শুরু হয়েছে এমনই এক অভিনব উদ্যোগ। জঙ্গল হোক বা গৃহস্থের বাগান, অবাঞ্ছিত ফেলে দেওয়া গাছেদের নিয়েই গড়ে উঠেছে একটি ট্রি হাব। আর দেখতে দেখতে এসে গেল সেই গাছ লাগানোর সময়ও। গত ২ বছর ধরে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করার পর এবারের শীতে গোটা দেশজুড়ে ১ মিলিয়ন গাছ লাগানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে আমস্টারডামের ট্রি হাব (Amsterdam Tree Hub)।
পরিত্যক্ত গাছেদের বাঁচানোর উদ্দেশ্য নিয়েই ২০১৯ সালে তৈরি হয় ‘মির বোমেন নু’ নামের একটি প্রকল্প। পরিবেশকর্মী হ্যানেক ভন ওরমন্ডের সঙ্গে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন আরও অনেকে। প্রথম বছরেই ৫০ হাজার চারাগাছ লাগানো হয় এই প্রকল্পের তরফ থেকে। তার মধ্যেই এসে পড়ে করোনা অতিমারী। কিন্তু গাছ লাগানোর কাজ বন্ধ হয়নি। ২০২০ সালে শীতের শুরুতেই ৮০ হাজার গাছ লাগানো হয়। আর সারা শীত জুড়ে সংখ্যাটা ১ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। তবে এবার আর শুধু আমস্টারডাম শহরে নয়, বরং গোটা নেদারল্যান্ডস জুড়ে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন ওরমন্ড। ইতিমধ্যে ১০ লক্ষের বেশি চারাগাছ সংগ্রহ করেছেন তিনি।
বনকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে জঙ্গল পরিষ্কার করা গাছেদের সংগ্রহ করেছেন ওরমন্ড। পাশাপাশি বহু গৃহস্থের বাগান থেকেও সংগ্রহ করেছেন চারাগাছ। আবার সেই গৃহস্থরাই তাঁর সংগ্রহ থেকে অন্য চারা নিয়ে গিয়েছেন। সমস্ত গাছ সমস্ত জায়গায় বাঁচে না। অথচ প্রতিটা গাছের প্রাণই সমান গুরুত্বপূর্ণ। এই বার্তাই দিতে চান ওরমন্ড। নেদারল্যান্ডসের দেখাদেখি ইউরোপের অন্যান্য দেশেও এমন উদ্যোগ গড়ে উঠবে বলে আশাবাদী তিনি। তাছাড়া, কপ-২৬ সম্মেলনে যে বনসৃজনের লক্ষমাত্রা নিয়েছে নেদারল্যান্ডস, তা পূর্ণ করতেও এমন আয়োজনের প্রয়োজন। তবে এক বছরের মধ্যে যদি ৩৭ হাজার হেক্টর এলাকাজুড়ে ১ মিলিয়ন গাছ লাগানো যায়, তাহলে সেই লক্ষমাত্রা পূর্ণ করা একেবারে অসম্ভব নয়।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কন্যাজন্মের আনন্দে ১১১টি বৃক্ষ রোপণ, এমনই রীতি রাজস্থানের গ্রামে