চলে গেলেন আকাশবাণীর ‘স্বর’ বরুণ মজুমদার

একটা সময় বাঙালির ঘুম ভাঙত অতি চেনা একটা সানাইয়ের সুরে। তারপর রেডিওর ওপ্রান্ত থেকে ভেসে আসত- “আকাশবাণী কলকাতা… আজকের বিশেষ বিশেষ খবর হল…”। আস্তে আস্তে ভিড় বাড়ত রেডিওর সামনে। খবর পড়তেন বরুণ মজুমদার। একসময়ের এই চেনা গলা থেমে গেল সম্প্রতি। ৭৭ বছর বয়সে চলে গেলেন আকাশবাণীর এই সংবাদ পাঠক।

দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বরুণ মজুমদার। ১৯৪২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর হাওড়ার শিবপুরে জন্ম হয় তাঁর। কলেজ জীবনে পড়াশোনাও করেছেন সাংবাদিকতা নিয়ে। ১৯৬৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ করেন তিনি। সেই সময় আকাশবাণীর অন্যতম সাংবাদিক এবং সংবাদ পাঠক ছিলেন তিনি। সাংবাদিকতার কাজ তাঁকে ‘ওয়ার করেসপন্ডেন্ট’ হিসেবে নিয়ে গেছে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে। তৎকালীন পাকিস্তান সেনার হাতে বন্দিও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মেধাবী বরুণবাবু, নিজের উপস্থিত বুদ্ধির জোরে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। 

শুধু সাংবাদিকতাই নয়, দীর্ঘদিন ধরে বরুণবাবু যুক্ত ছিলেন শিক্ষকতার সঙ্গে। শিবপুরের বি কে পাল ইন্সটিটিউট, মেদিনীপুর কলেজ, ইন্দিরা গান্ধী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি জায়গায় শিক্ষকতা করেছেন তিনি। যুক্ত ছিলেন সাহিত্যের সঙ্গেও। দীর্ঘ ১০ বছর যুক্ত ছিলেন ‘বসুমতী’ পত্রিকার সঙ্গে। সারাজীবনে নিজের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন নানা পুরস্কার। ২০১১ সালে ভারত সরকার ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান দিয়ে সম্মানিত করেন বরুণ মজুমদারকে। সেই তিনিই, গত ১৪ অক্টোবর হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। থেমে গেল বাংলার সাংবাদিকতার আরও একটা স্বর।

Latest News See More