মডেলিং-এর দুনিয়া ছেড়ে পড়াশোনায় ডুব, সিভিল সার্ভিসে সাফল্য ঐশ্বর্যের

একাগ্রতা আর পরিশ্রমের কাছে নতজানু হতে বাধ্য যে কোনো প্রাচীরই। তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন ঐশ্বর্য। মডেল দুনিয়ার ফোকাসে থাকা ঐশ্বর্য শেওরন। তবে এবার মডেলিং নয়, ঐশ্বর্য সাফল্যের ফুল ফোটালেন একেবারে ভিন্ন ক্ষেত্রে। গত মঙ্গলবারই প্রকাশিত হয়েছে ২০১৯ ইউনিয়ন পাবলিক সিভিল-সার্ভিস পরীক্ষার ফলাফল। আর ভারতের এই কঠিনতম প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ৯৩তম স্থান দখল করেছেন ঐশ্বর্য।

তবে ছোটো থেকেই ঐশ্বর্য পড়াশোনায় প্রথম সারির ছাত্রীই ছিলেন। ছিলেন ক্লাস ক্যাপ্টেনও। স্কুলস্তরে বিজ্ঞান বিভাগেই পড়াশোনা করেছেন ঐশ্বর্য। পরবর্তীকালে কলেজে গিয়ে পাল্টেছেন বিষয়। দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজ থেকে করেছেন বাণিজ্যের স্নাতক। পাশাপাশি মডেলিং-এ তাঁর আগ্রহ ছিল বটেই। মঞ্চ কাঁপিয়েছেন একাধিক র‍্যাম্পেরও।

জন্মলগ্ন থেকেই তাঁর ভবিতব্যের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল মডেলিং। মিস ওয়ার্ল্ড ঐশ্বর্য রাইকে দেখেই মেয়ের নাম ঠিক করেছিলেন তাঁর মা। স্বপ্ন ছিল মেয়ে আকাশ ছোঁবে একদিন। সেই স্বপ্নকেই পূরণ করেছেন ঐশ্বর্য। ২০১৬ সালে মিস ইন্ডিয়ার মঞ্চে মূলপর্বেও পৌঁছে ছিলেন। পৌঁছেছিলেন মডেল দুনিয়ার শিখরে। কিন্তু এসবের ফাঁকে ভুলে যাননি নিজের স্বপ্নের কথাও। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার স্বপ্ন। এ ব্যাপারে বাবার চরিত্রকেই আইডল করেছিলেন ঐশ্বর্য। তাঁর বাবা কর্ণেল অজয়কুমার শেওরন বর্তমানে তেলেঙ্গানায় ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত। দেশের মানুষের সেবার কাজে নিজেকে সঁপে দেওয়া ইচ্ছে ঐশ্বর্যের মনে বুনে দিয়েছিলেন তাঁর বাবাই।

নিজের সেই ইচ্ছাপূরণের জন্যেই সকলরকম কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেও পিছপা হননি ঐশ্বর্য। মডেলিংয়ের মঞ্চ, জনপ্রিয়তা ছেড়েছিলেন পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য। ছেড়েছিলেন মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারও। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া দূরত্ব রেখেছিলেন স্মার্ট ফোনের থেকে। আর এক বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমেই শেষমেশ সাফল্য। তবে কোনো কোচিংয়েই পড়াশোনা করেননি তিনি। সম্পূর্ণ বাড়িতেই অধ্যাবশায় আর নিজের জেদেই পেরিয়ে গেছেন একটা আস্ত পাহাড়। 

আরও পড়ুন
বিলুপ্তপ্রায় বিরহড় জনগোষ্ঠীর প্রথম কন্যা হিসেবে উচ্চমাধ্যমিক পাশ জানকীর, তৈরি হল ইতিহাস

ঐশ্বর্যের এই কৃতিত্বের খবরে উচ্ছ্বসিত নেট দুনিয়া। মঙ্গলবার থেকেই শুভেচ্ছা বার্তাতে ভেসে গেছেন তিনি। অন্যদিকে প্রায় এক বছর মডেলিং দুনিয়া থেকে অজ্ঞাতবাসে থাকার পরেও, এই ফলাফলের জেরেই এক ধাক্কায় উঠে এসেছেন সার্চ ইঞ্জিনের শীর্ষে। এমনকি পেরিয়েও গিয়েছেন নেমসেক ঐশ্বর্য রাই বচ্চনকেও। বছর তেইশের ঐশ্বর্য শেওরন এখন ভারতের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে, তরুণ প্রজন্মের কাছে এক বড়ো অনুপ্রেরণা...

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
৩০ বছর পর ফেরা পড়াশোনায়, ঠাকুমার উচ্চ-মাধ্যমিক পাশের খবরে উচ্ছ্বসিত নাতনিরাও