২ বছরে সবচেয়ে দূষিত বাতাস ডিসেম্বরের শুরুতেই, সংকটে তিলোত্তমা

লকডাউনের সময় যেন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছিল শহরের পরিবেশ। কলকাতার বুকে ফিরে এসেছিল পাখির দল। কিন্তু ক্রমশ পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে দূষণের প্রকোপ। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে যে, বিগত ২ বছরে শহরে বায়ুদূষণের রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেল ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের হিসাব। সম্প্রতি একটি রিপোর্টে এমনটাই জানিয়েছেন সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভারমেন্টের সমীক্ষকরা।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগস্ট মাসে সবচেয়ে পরিষ্কার ছিল শহরের বাতাস। তখন বাতাসে পিএম ২.৫ কণার পরিমাণ নেমে গিয়েছিল প্রতি ঘনমিটারে ১০ মাইক্রোগ্রামে। এর জন্য অবশ্য লকডাউনের পাশাপাশি বর্ষার প্রভাবের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। কিন্তু ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই সেই পরিমাণটা দাঁড়ায় প্রতি ঘনমটারে ১৩০ মাইক্রোগ্রামে। শহরবাসীর স্বাস্থ্য যে রীতিমতো সঙ্কটে রয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে এও বলা হয়েছে, যেভাবে দর্শনক্ষেত্র সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে, তাতে বায়ুদূষণের মাত্রা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। দক্ষিণ কলকাতায় মেঘমুক্ত দিনেও সকালে ৬০ থেকে ১০০ মিটারের বেশি দূরত্বে কিছু দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। স্বাভাবিক পরিবেশে যেখানে ১ কিলোমিটার দূরত্বের বস্তুও দেখতে পাওয়ার কথা। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রেও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কর্ণধার জিসি দেবনাথ। সেইসঙ্গে তিনি মনে করছেন, ইতিমধ্যে শীতের প্রভাবে বাতাসের বেগ কমে যাওয়ায় দূষণের হাত থেকে সহজে মুক্তি মিলবে না। রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ থেকে অবশ্য কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে ক্রমাগত বাড়তে থাকা দূষণকে আটকাতে না পারলে তার প্রভাব যে অর্থনীতির উপরেও পড়বে, সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন সকলেই।

Powered by Froala Editor