বিগত কয়েক বছর থেকেই তাপবিদ্যুতের পরিবর্তে অপ্রচলিত শক্তির উৎসকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেশি জোর দিচ্ছে ভারত। বিশেষত, ২০৩০ সালের মধ্যে সৌরশক্তির ব্যাপক ব্যবহারে কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে ভারতের। তবে সৌরশক্তির উৎপাদন ক্রমশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বায়ুদূষণের (Air Pollution) জন্য। সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে আনল দিল্লি আইআইটির গবেষণা।
সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০০১ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বায়ুদূষণের কারণে ভারতে আনুভূমিক বিকিরণের পরিমাণ কমেছে ২৯ শতাংশ। অর্থাৎ, বায়ুতে বিভিন্ন দূষকের উপস্থিতি শর্টওয়েভ শোষণ করায় সোলার প্যানেলের অনুভূমিক পৃষ্ঠে কম পরিমাণ শর্টওয়েভ সৌর বিকিরণ এসে পৌঁছাচ্ছে। মূলত, এই বিকিরণই সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দায়ী। কিন্তু ঠিক কত পরিমাণ সৌরবিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে বায়ুদূষণের জন্য?
গবেষণায় উঠে আসছে, কার্বন নির্গমন নিয়ন্ত্রণ এবং ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে, গোটা ভারতে বর্তমানের তুলনায় ০.৬-১.৬ লক্ষ কোটি ইউনিট সৌরবিদ্যুৎ বেশি উৎপাদিত হতে পারে। যার বার্ষিক মূল্য ৩২-৮৪ কোটি মার্কিন ডলার। তবে আশঙ্কার বিষয় হল, দিল্লি কিংবা অন্যান্য মেট্রো শহরগুলিতে বায়ুদূষণ রোধের ব্যবস্থা নেওয়া হলেও, ভারতের বেশিরভাগ অংশেই এখনও পর্যন্ত চালু করা হয়নি ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম। পাশাপাশি বায়ুদূষণের জেরে, বিশেষত বায়ুতে এয়ারোসলের মাত্রা বৃদ্ধির জন্য কার্যক্ষমতা কমছে সৌর প্যানেলেরও। সেদিক থেকেও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। সম্প্রতি দিল্লি আইআইটির এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে অ্যাটমোস্ফিরিক সায়েন্স পত্রিকায়।
সবমিলিয়ে বায়ুদূষণকে নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে, ভারতে ক্রমশ অসম্ভব হয়ে উঠবে অপ্রচলিত শক্তির উৎপাদন। এখন দেখার এই গবেষণার ভিত্তিতে কত দ্রুত বায়ু পরিশোধনে ব্যবস্থা নেয় ভারত সরকার…
Powered by Froala Editor