বিজ্ঞানী হলেও তাঁর দিন কেটেছে মাঠে মাঠেই। কাছ থেকে চিনত চেয়েছেন শস্যকে। সমস্ত খতিয়ে দেখতে ছুটে গিয়েছেন রাঙামাটি থেকে দিনাজপুর বা শেরপুর। এভাবেই বাংলাদেশের কৃষিজগতে বিপ্লব এনে দিয়েছিলেন তিনি। বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর সেই অদ্বিতীয়া বিজ্ঞানীকে হারাল বাংলার মানুষ। প্রয়াত হলেন বাংলাদেশ রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক তমাল লতা আদিত্য।
বেশ কিছুদিন ধরেই হৃদরোগে ভুগছিলেন ড. আদিত্য। কিন্তু তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন না, এমন আশঙ্কা কেউ করেননি। ৫৩ বছর বয়সে রীতিমতো অকালে প্রাণ হারালেন কিংবদন্তি এই মানুষটি। বিজ্ঞান তো বটেই, লিঙ্গসাম্যের লড়াইতেও এক অন্যতম নাম তমাল লতা। নিজেকে মহিলা বিজ্ঞানী বলে পরিচয় দিতেন না তিনি। বিজ্ঞানীর কি লিঙ্গ হয় নাকি? বিজ্ঞানের সাধনায় প্রত্যেককেই পরিশ্রম করতে হবে অক্লান্ত।
১৯৬৭ সালে ময়মনসিংহ জেলার কুন্ডল গ্রামে জন্ম ড. আদিত্যর। ১৯৯৪ সালে মাত্র ২৭ বছর বয়সে ব্রি-এর যুক্ত হন তিনি। আর তারপর থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেখানেই কাজ করেছেন। পাশাপাশি আরও অনেক গবেষণা সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসাবে কাজ করেছেন। সব মিলিয়ে ২০টি নতুন প্রজাতির ধানের বীজের জন্ম দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও আরও নানা বীজের আবিস্কারের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। তাঁর আবিস্কার প্রতিকূল অঞ্চলকেও চাষযোগ্য করে তুলেছে। সুগন্ধী ধানের চাষ ব্যবসায় উন্নতি এনে দিয়েছে।
সারা জীবনের কাজের সম্মানও পেয়েছেন বহুবার। তাঁর নেতৃত্বে ব্রি-র উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার পেয়েছে। ২০২০ সালেই নারীদিবসে জয়া আলোকিত নারী ২০২০ সম্মাননা দেওয়া হয় তাঁকে। অকালে বিদায় না নিলে হয়তো আরও নানা গবেষণার কাজ করতে পারতেন তিনি। আর সেই গবেষণায় উপকৃত হত বাংলাদেশের মানুষও। তবে তাঁর কীর্তি যে সারা দেশের মানুষ চিরকাল মনে রেখে দেবে, সেকথা বলাই বাহুল্য।
তথ্যসূত্রঃ এই বিজ্ঞানী মাঠেই থাকেন, প্রথম আলো
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
প্রয়াত 'চাঁদমামা'র কিংবদন্তি শিল্পী শঙ্কর, ৯৬ বছরে এসে থামল তুলির টান