মডার্না কোম্পানির ভ্যাকসিনে স্বীকৃতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার, জমছে আশঙ্কাও

করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে নানা দেশের সরকার বিভিন্ন ধরণের প্রতিষেধক প্রয়োগ শুরু করলেও এখনও তার জোগান যথেষ্ট কম। চারটি সংস্থার মিলিত উৎপাদন পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না। আর এই পরিস্থিতিতেই পঞ্চম প্রতিষেধক হিসাবে মডার্না সংস্থার প্রতিষেধককে স্বীকৃতি দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অ্যাসিস্টেন্ট ডিরেক্টর জেনারেল মারিয়েঙ্গালা সিমাও জানিয়েছেন, মডার্নার তৈরি প্রতিষেধককে স্থায়ী অনুমতি দেওয়া না হলেও এই জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় তা ব্যবহার করা যেতে পারে।

অন্যান্য প্রতিষেধকের মতোই মডার্নার প্রতিষেধকটিও সম্পূর্ণ নিরাপদ বলে পরীক্ষিত নয়। ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে অনেকের মধ্যে তৈরি হচ্ছে আশঙ্কাও। যদিও এক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চললে আশঙ্কার কোনো কারণ নেই বলেই জানাচ্ছে সংস্থা। ভারতে প্রচলিত কোভ্যাক্সিন এবং কোভিশিল্ড প্রতিষেধকদুটি তৈরি হয় নিষ্ক্রিয় বা মৃত ভাইরাস থেকে। তবে মডার্না-র প্রতিষেধকে ব্যবহার করা হয় জীবিত এম-আরএনএ। ফলে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিছুটা বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। যদিও ইংল্যান্ডে গত তিন মাস ধরে পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হয়েছে। এবং প্রায় কোনো অঙ্গেই কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে জানাচ্ছেন পরীক্ষকরা। হাইপারটেনশন, হাই ব্লাড সুগার অথবা কিডনি বা হার্টের অসুখের রোগীদের ক্ষেত্রেও এই প্রতিষেধক সম্পূর্ণ নিরাপদ বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও জীবিত এম-আরএনএ থাকায় কোনো মানুষের শরীরে অ্যালার্জি তৈরি হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রতিষেধক দেওয়ার আগে অ্যালার্জি পরীক্ষা করে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

অবশ্য এম-আরএনএ প্রতিষেধক ব্যবহারের বিষয়ে আশঙ্কার তেমন কোনো কারণ যে নেই, তার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় ফাইজার-বায়োএনটেক সংস্থার প্রতিষেধকের ব্যবহার থেকেই। আমেরিকা সহ পৃথিবীর ৪০টি দেশে এই প্রতিষেধক সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। আর এটাই ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত প্রথম কোভিড ভ্যাকসিন। এক্ষেত্রে বড়ো কোনো দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয়নি। ফলে মাডার্না ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও আশঙ্কার তেমন কারণ নেই, একথা বলাই যায়। অন্যদিকে অন্যান্য প্রতিষেধকের তুলনায় এর কার্যকারিতা অনেকটাই বেশি। এই ভ্যাকসিন প্রয়োগে ৯২ শতাংশ সাফল্য পাওয়া যাবে বলেই দাবি পরীক্ষকদের। পাশাপাশি মানুষের শরীরে এই ভ্যাকসিন কাজ শুরু করে অনেক তাড়াতাড়ি। দ্বিতীয় তরঙ্গে মিউট্যান্ট ভাইরাসের ক্ষেত্রেও এর কার্যকারিতা একইরকম বলে মনে করছেন পরীক্ষকরা। তবে আদৌ এই ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হবে কিনা, সে-বিষয়ে প্রতিটা দেশকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছে সংস্থা। ভ্যাকসিনের জোগান বাড়াতে এই প্রতিষেধক কতটা কাজে আসে, তাই এখন দেখার বিষয়।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
‘আমরা খেতে পেলে কোভিড-আক্রান্তরাও খেতে পাবেন’; লড়ছে বাঙালির রান্নাঘরও

Latest News See More