রাস্তার ধারে একটি বাড়ির জানলা। জানলার কাচে একটি পোস্টার। পোস্টারে লেখা, “আমি আমার স্ত্রী এবং একমাত্র বন্ধু জো-কে হারিয়েছি। আমার আর কোনো বন্ধু বা পরিজন নেই। ২৪ ঘণ্টার নিঃসঙ্গ নীরবতা অসহ্য মনে হয়। কেউ কি আমাকে সাহায্য করবে না?” এমনই কাতর আবেদন ইংল্যান্ডের ইস্ট হ্যাম্পসায়ারের ৭৫ বছরের এক বৃদ্ধের। বার্ধক্যের যন্ত্রণা কতটা দুঃসহ হতে পারে, তার এমন জ্বলন্ত উদাহরণ হয়তো খুব কমই পাওয়া যায়।
প্রাক্তন চিকিৎসক টনি উইলিয়ামের জীবনের একমাত্র সঙ্গী ছিলেন তাঁর স্ত্রী জো। নিজের সন্তান-সন্ততি ছিল না। অন্যান্য আত্মীয়দের সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ ছিল না। দুজনের ছোট্ট সংসারে সারা জীবন কাটিয়ে দেওয়া কঠিন হবে, এমনটা মনে হয়নি কোনোদিনই। কিন্তু এর মধ্যেই ক্যানসার থাবা বসায় জো-এর শরীরে। গত মে মাসেই তাঁর মৃত্যু হয়। আর সেই থেকেই একাকিত্ব গ্রাস করেছে টনি উইলিয়ামকে।
ইংল্যান্ডের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে টনি জানিয়েছেন, এই কয়েকমাসেই তিনি বুঝেছেন একাকিত্ব কাকে বলে। সারাদিন টেলিফোনের সামনে বসে থাকেন অপেক্ষা নিয়ে। কখন সেই যন্ত্র বেজে উঠবে। কিন্তু কোথাও কেউ নেই তাঁর খোঁজ নেওয়ার জন্য। তিনি নিজে কিছু পরিচিত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাতেও কোনো সুবিধা হয়নি। সবাই যে যার নিজের জীবনে ব্যস্ত।
এই যন্ত্রণাময় জীবনে একজন বন্ধুর আবেদন নিয়ে নিজের জানলায় পোস্টার লাগিয়েছেন টনি উইলিয়াম। সংবাদপত্রেও এই মর্মে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। যদিও এখনও কোনো বন্ধুকে তিনি পাননি। কেবল আশায় আছেন, হয়তো কখনও কারোর চোখে পড়বে এই পোস্টার। একটু কি সময় হবে না কারোর? নাকি এই ব্যস্ত পৃথিবীতে বয়স্ক মানুষদের একাকিতই একমাত্র ভবিষ্যৎ?
আরও পড়ুন
বিশ্বযুদ্ধের শেষতম বিচারে কারাদণ্ড ৯৩ বছরের নাৎসি বৃদ্ধের; জড়িয়ে ছিলেন ইহুদি হত্যায়
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
নিঃসঙ্গ দিন কাটছে বৃদ্ধাশ্রমে, আবাসিকদের জন্য ‘হাগ টানেল’ তৈরি ব্রাজিলে