ইঁদুরের দৌরাত্ম্যে ক্লান্ত অস্ট্রেলিয়া, সমাধান ‘শান্তিচুক্তি’তেই!

জার্মানির হ্যামলিন শহরের সেই ইঁদুরের উপদ্রবের গল্প কে না জানে! তবে বাস্তবেও এমন উপদ্রবে যে মানুষ কতটা কাহিল হতে পারে, তার প্রমাণ পাওয়া গেল সাম্প্রতিক অস্ট্রেলিয়ায়। নিউ সাউথওয়েলস এবং কুইন্সল্যান্ড অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে প্রায় ৬ মাস ধরে তাণ্ডব দেখাচ্ছে এই ক্ষুদে স্তন্যপায়ীর দল। অবস্থা এমন হয়ে উঠেছে যে মানুষ একরকম তা মেনেই নিয়েছে। হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা তো আর বাস্তবে নেই। অতএব মেনে নেওয়া ছাড়া আর উপায় কী?

প্রথম প্রথম অবশ্য বেশ কোমড় বেঁধেই নেমেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মানুষ। সরকারের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল কীটনাশক বিতরণ। ঘরে ঘরে মানুষ ইঁদুর ধরার ফাঁদ পাততে শুরু করেছিলেন। নিউ সাউথ-ওয়েলস এবং কুইন্সল্যান্ডের মানুষ ঘোষণা করেছিলেন, এ এক যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি। সবাই মিলেই জিততে হবে এই যুদ্ধ। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেল না। ক্রমশ উৎপাত বাড়তেই থাকল। ফলে এখন ইঁদুরের সঙ্গে বসবাসকেই স্বাভাবিক মনে করতে শুরু করেছেন তাঁরা। আহা, তারাও তো এই প্রকৃতিরই সদস্য!

কুইন্সল্যান্ডের এক স্কুলের অধ্যক্ষ সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, স্কুলের বাচ্চা বাচ্চা পড়ুয়ারাও আর ইঁদুর দেখে ভয় পাচ্ছে না। কিছুদিন আগেও তারা ভয়ে আঁতকে উঠত। কিন্তু এখন তাদের বেঞ্চের নিচ দিয়ে ইঁদুরের দল খেলা করে বেড়ালেও ভ্রূক্ষেপ নেই কারোর। তবে ইঁদুররা ক্ষতি করেই চলেছে। বাড়ির আসবাবপত্র তো নষ্ট করছেই, এমনকি বিদ্যুতের তার পর্যন্ত কেটে দিচ্ছে। নিউ সাউথ-ওয়েলসের এক ব্যক্তি মাত্র চারদিন ঘরের বাইরে ছিলেন। আর তার মধ্যেই তাঁর ঘরকে রীতিমতো দুর্গে পরিণত করে তোলে ইঁদুরের দল। ফিরে এসে দরজা খুলতেই দেখলেন ঘরের মধ্যে অন্তত ১০০টি ইঁদুর ঘুরে বেড়াচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়া সরকার অবশ্য এখনও চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন পরীক্ষাগারে শুরু হয়ে গিয়েছে উন্নত কীটনাশক তৈরির উদ্যোগ। নর্দমার ধারে বিশেষ ধরণের জালের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। এইসব উদ্যোগে বিশেষ আশাবাদী নন নাগরিকরা। বরং কাঠের আসবাবপত্র বা পুরনো যন্ত্রপাতির ব্যবহার বন্ধ করে যদি মানিয়ে নেওয়া যায়, তাই স্বস্তির। কতদিন যে এভাবে ইঁদুরের উপদ্রব সহ্য করতে হবে, জানেন না কেউই।

আরও পড়ুন
সেরে উঠল পক্ষাঘাতগ্রস্ত ইঁদুর! বিরল কৃতিত্ব বিজ্ঞানীদের

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
স্বর্ণপদক পেল আফ্রিকান ইঁদুর! সাহসিকতার জন্য বিরল সম্মান ‘মগবা’-র