সেই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে পৃথিবীর বুকে বাস করছে বাইসন। প্রাণীটা মাংসাশী না হলেও তার শরীরের ক্ষমতার কারণেই মানুষ তাকে সমঝে চলে। কিন্তু মানুষের আধিপত্যের কাছে নতি স্বীকার করেই ক্রমশ পৃথিবীর এক প্রান্তে সরে যাচ্ছে তাদের অস্তিত্ব। ঠিক যেমন ৬০০০ বছর আগে ইংল্যান্ডের জঙ্গল থেকে বিদায় নিয়েছিল বাইসন। হ্যাঁ, প্রায় ৬০০০ বছর পরেই আবারও পুরনো বাসস্থানে ফিরছে এই প্রাণী। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২২ সালের বসন্ত কালেই ওয়েস্ট ব্লিন জঙ্গলে নিয়ে আসা হবে একটি পুরুষ এবং তিনটি স্ত্রী বাইসন।
তবে এই উদ্যোগ শুধু বাইসন ফিরিয়ে আনার নয়, বরং জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্রকেই নতুন করে বাঁচিয়ে তোলার উদ্যোগ এটি। দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ বিশেষজ্ঞেরা এই কাজে চেষ্টা চালিয়ে গেলেও সেভাবে সাফল্য মেলেনি। তাই এবার বাইসনের হাতেই তুলে দেওয়া হবে দায়িত্ব। বাইসন তার বেঁচে থাকার সঙ্গে সঙ্গেই তার পরিবেশকে একভাবে গড়ে নেয়। এই অর্থে প্রায় তাকে ইঞ্জিনিয়ার বলা যায়, মনে করছেন কেন্ট ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্টের আধিকারিকরা। তবে আপাতত পরীক্ষামূলকভাবেই জঙ্গলে বাইসনের বাসস্থান তৈরি করা হচ্ছে।
ইংল্যান্ডে বাইসনের একটি বিশেষ প্রজাতি বাস করত আজ থেকে ৬০০০ বছর আগে। তবে ক্রমশ সেই সমস্ত জিন বিলুপ্ত হয়ে যায়। তবে বিজ্ঞানীরা পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে ক্রমশ সেই প্রজাতির কাছাকাছি জিন তৈরি করতে পেরেছেন। আজ আবার সেই প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনতে পেরে সাফল্যের স্বাদ অনুভব করছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও এর লক্ষ্য সুদূরপ্রসারী। সেই বিষয়ে সাফল্য পাওয়া যাবে কিনা জানা নেই। কিন্তু ওয়েস্ট ব্লিন জঙ্গলে ৫০০ হেক্টর এলাকায় আবার নতুন করে ফিরে আসতে চলেছে সেই প্রাচীন ইতিহাস, একথা বলাই যায়। যে প্রকৃতি একসময় মানুষ ধ্বংস করেছিল, তাকেই বাঁচিয়ে তোলার উদ্যোগ নিচ্ছে মানুষই।
Powered by Froala Editor