ইথিওপিয়ার কোসে মাঠ। দেশের সবচেয়ে বেশি বর্জ্যপদার্থ জমা হয় এখানে। অনেকটা আমাদের ধাপার মাঠের মতো। এই ছবি প্রায় ৫০ বছরের। তবে এর মধ্যেই হঠাৎ আগুন লাগে বেশ কয়েকবার। একের পর এক দুর্ঘটনায় মারা যান প্রায় ১৪০ জন মানুষ। আর তারপরই নড়েচড়ে বসেন স্থানীয় আমলারা। ফেলে দেওয়া আবর্জনাকে অন্য কোনো কাজে লাগানোর কথা ভাবলেন তাঁরা। আর এভাবেই তৈরি হল এমন এক বিদ্যুৎকেন্দ্র, যার শক্তির উৎপাদন হয় আবর্জনা থেকে। শুধু ইথিওপিয়া নয়, সমস্ত আফ্রিকাতেই এমন বিদ্যুৎকেন্দ্র এই প্রথম।
আরও পড়ুন
আবর্জনা পরিষ্কার করছেন খোদ ‘স্পাইডারম্যান’, আশ্চর্য দৃশ্য ইন্দোনেশিয়ার রাস্তায়
আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ তৈরির জন্য বিশেষ প্রকল্প শুরু করেছে ইথিওপিয়া সরকার। 'রেপি' নামের সেই প্রকল্পের পথচলা শুরু কোসে কেন্দ্র থেকেই। আফ্রিকায় এই প্রথম হলেও, ইউরোপে কিন্তু এই ব্যবস্থা ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয়। শহরাঞ্চলের ২৫ শতাংশ আবর্জনাই সেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। আফ্রিকায় এই নতুন উদ্যোগে সহযোগিতা করেছেন ব্রিটিশ ফার্ম কেমব্রিজ ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেডের ইঞ্জিনিয়াররা। এই পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিকে উন্নয়নশীল দেশগুলির কাছে পৌঁছে দিতে পেরে খুশি তাঁরাও।
আরও পড়ুন
একসময়ে ছিল আবর্জনার পাহাড়, ধাপার মাঠ বদলে গেল সবুজ উপত্যকায়
নতুন এই বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরিতে খরচ পড়েছে প্রায় ৯৬ মিলিয়ন ডলার। বিশেষ চুল্লিতে আবর্জনা পুড়িয়ে সেই তাপ থেকে তৈরি হবে বিদ্যুৎ। অথচ কোনো ধোঁয়া বেরোবে না এখান থেকে। আর এইভাবে প্রতিদিন প্রায় ১৪০ টন আবর্জনা বিদ্যুৎ তৈরির কাজে লাগানো যাবে বলেই মনে করছেন সরকারি আধিকারিকরা। আর ইথিওপিয়ার এই উদ্যোগ যে আফ্রিকার অন্যান্য দেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলির কাছে একটা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে, সে ব্যাপারে আশাবাদী জনপ্রতিনিধি জেরুবাবেল গ্যতাচিউ।
আরও পড়ুন
হিমালয় থেকে ৪৫ কেজি আবর্জনা উদ্ধার বাঙালি অভিযাত্রীদের
বাতাসে কার্বনের পরিমাণ তো বাড়ছে প্রতিনিয়ত। আর তার জন্য দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রচুর। তাই এই কার্বনমুক্ত প্রযুক্তি যে ভবিষ্যতকে খানিকটা সুরক্ষিত করবে, সে ব্যাপারে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।