গত আগস্ট মাসের কথা। কাবুল পতনের দিন দুয়েক আগে থেকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল আফগানিস্তানের মহিলা ফুটবল শিবিরে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল অসংখ্য আফগান তরুণীর ভবিষ্যৎ। গা ঢাকা দিতে হয়েছিল গোপন সেফহাউসে। স্রেফ প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছিল এক শহর থেকে অন্য শহরে। এবার আফগানিস্তানের জাতীয় ফুটবল দলের মেয়েরা স্থায়ী আশ্রয় পেলেন পর্তুগালে।
কাবুল পতনের পরেই দেশ ছেড়েছিলেন আফগানিস্তানের মহিলাদের জাতীয় দলের অধিনায়ক ফারখুন্দা মুহতাজ। সপরিবারে শরণার্থী হিসাবে আশ্রয় নিয়েছিলেন কানাডায়। সেখান থেকেই ক্রমাগত অন্যান্য মহিলা ফুটবলারদের উদ্ধারের জন্য ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে গেছেন তিনি। দ্বারস্থ হয়েছিলেন আন্তর্জাতিক শক্তিগুলির কাছে। শেষ পর্যন্ত তাঁর সেই আবেদনেই সাড়া দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনী।
সম্প্রতি, সেই কথা মতোই মার্কিন সেনা এবং ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি সিআইএ যৌথ অভিযান চালায় আফগানিস্তানে। তালিবানের সঙ্গে মধ্যস্থতা করার পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর কাবুল থেকে বিশেষ চ্যাটার্ড বিমানে উদ্ধার করে আনা হয় জাতীয় দলের মহিলা ফুটবলারদের। ২৬ জন ফুটবলার-সহ তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মিলিয়ে মোট ৮০ জনকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয় আফগানিস্তান থেকে। অন্যদিকে তরুণ আফগান ফুটবলারদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসে পর্তুগালের সরকার।
বর্তমানে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের একটি অ্যাসাইলামে থাকার জায়গা করে দেওয়া হয়েছে আফগান তরুণীদের। পাশাপাশি তরুণ প্রতিভারা যাতে প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের সুবিধা পান সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে পর্তুগাল প্রশাসন।
১৯৯৬ সালেও তালিবান আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পরও দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন মহিলা ফুটবলাররা। প্রাক্তন আফগান দলের গোলকিপার তথা কোচ উইদা জেমারাই-সহ অধিকাংশ মহিলা ফুটবলাররাই আশ্রয় নিয়েছিলেন সুইডেনে। কিন্তু প্রাণ বাঁচলেও আর নতুন করে খেলায় ফেরা সম্ভব হয়নি নতুন পরিবেশে গিয়ে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে পর্তুগাল যেন নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে আফগান তরুণীদের। আশ্বাস দিচ্ছে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের…
Powered by Froala Editor