বাড়িতে জীবজন্তু পুষতে যেমন পছন্দ করেন অনেকেই, তেমনই চিড়িয়াখানার পশুদের দায়িত্ব নিতেও দেখা যায় অনেককে। বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিদের বাঁচানোর তাগিদেই হোক, অথবা নিছক খানিকটা শখ মেটাতে এমন কাজ করেন অনেকেই। আর এই লকডাউনের মধ্যে এমন শখ যদি কারোর হয়, তাহলে তাঁদের জন্য বিশেষ সুযোগ নিয়ে এলেন ব্যানারঘাটা বায়োলজিক্যাল পার্ক কর্তৃপক্ষ।
বেঙ্গালুরু শহরের সন্নিকটে এই চিড়িয়াখানায় বাস করে বহু বিরল ও হিংস্র প্রজাতির প্রাণী। তার মধ্যে যেমন আছে নানা ধরনের বিষধর সাপ অথবা আসামের ম্যাকাও, কিংবা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মতো প্রাণী। যেকোনো স্বাভাবিক সময়ে বহু পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে এই পার্কে। একমাসে দর্শকদের সংখ্যা দাঁড়ায় অন্তত ১৫ লক্ষ। তবে এর মধ্যেই লকডাউনের জেরে পর্যটকদের আনাগোনা একেবারে বন্ধ। চিড়িয়াখানার অর্থের জোগানেও টান পড়েছে স্বাভাবিকভাবেই। অন্যান্য অনেক চিড়িয়াখানার মতোই পশুদের খাবারের জোগান নিয়ে চিন্তিত ব্যানারঘাটা বায়োলজিক্যাল পার্কের কর্মকর্তারাও। আর সেই কারণেই হয়তো তাদের ভরণপোষণের জন্য বিজ্ঞাপন জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
চিড়িয়াখানার একজিকিউটিভ ডিরেক্টর বনশ্রী বিপিনের কথায় অবশ্য, শুধু অর্থের জন্য এই উদ্যোগ নয়। বরং মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে এই উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আর তাই ভরণপোষণের জন্য যে অর্থের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাও একেবারেই নূন্যতম। এই অর্থ থেকে কোনো মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষের নেই।
বছরে মাত্র সাড়ে তিন হাজার টাকায় একটি বিষধর সাপের দায়িত্ব নিতে পারেন যে কেউ। বিড়াল এবং ম্যাকাও গোত্রের প্রাণীর জন্য দিতে হবে বছরে পাঁচ হাজার টাকা। এমনিভাবে ৭৫০০ টাকায় হরিণ, ৩৫০০০ টাকায় চিতাবাঘ ইত্যাদি প্রাণীর স্বত্ত্বাধিকার লাভ করতে পারেন। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার এবং জিরাফের জন্য অবশ্য টাকাটা একটু বেশি। এক্ষেত্রে দাতাকে বছরে ১ লক্ষ টাকা দিতে হবে। আর এই অর্থের বিনিময়ে কোনো প্রাণীর স্বত্ত্বাধিকার দাবি করলে নিয়ম মেনে চিড়িয়াখানায় তাঁর নামে ফলক বসানো হবে। সেইসঙ্গে আইন অনুযায়ী থাকবে কর মঞ্জুরের সুবিধাও। অনেকেই তো শখ মেটাতে নানা জায়গায় খরচ করেন অনেক টাকা। এক্ষেত্রে যেমন এক বিচিত্র ধরনের অভিজ্ঞতা হবে, তেমনই অনেক বিরল প্রজাতির প্রাণীর অস্তিত্ব থাকবে নিরাপদে।