ক’দিন ধরেই বেশ খামখেয়ালী মেজাজে চলছে আবহাওয়া। সেই কারণেই খানিক দুশ্চিন্তাও ছিল। ঠিক হয়েছিল, দোলের দিন খোলা আকাশের নিচে জমাটি আড্ডা বসবে। এবারে বৃষ্টি এসে সব ভণ্ডুল করে দিলে তো সর্বনাশ। সকাল থেকে মেঘ-রোদ কাটাকুটি খেলছে। ঠিক যেন শব্দছক। সত্যজিৎ রায় এই শব্দছকের একটা চমৎকার নাম দিয়েছিলেন, ‘শব্দ জব্দ’। কাকতালীয়ই হবে হয়তো, এমন মেঘ-রোদের কাটাকুটি খেলার দিনে আমাদের আড্ডাও ছিল টিম ‘শব্দ জব্দের’ সঙ্গেই। ‘শব্দ জব্দ’ যে হইচই ওয়েব প্ল্যাটফর্মের সাম্প্রতিক কালে অন্যতম জনপ্রিয় একটি থ্রিলার সিরিজ, তা নিশ্চয়ই বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। ঠিক হয়েছিল, এই ওয়েব সিরিজের নানা কলাকুশলীদের নিয়েই আড্ডা জমাব আমরা। গল্পের ভিতরের গল্প, গান সবই মজুত থাকবে। আর মজুত থাকবে আবির। দোল বলে কথা!
আরও পড়ুন
“আমি চাই, আমার সিনেমা দর্শককে বিব্রত করুক, অস্বস্তিতে ফেলুক”— ইন্দ্রাশিস আচার্যর সঙ্গে একটি আড্ডা
আড্ডায় প্রথাগত সঞ্চালনা থাকে না। ঠিক করা প্রশ্ন থাকে না। এক্ষেত্রেও ছিল না। শুধু আড্ডার জাহাজটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রহরের পক্ষ থেকে হাজির ছিলেন অনিতেশ চক্রবর্তী। সঙ্গে ছিলেন মঞ্জিমা দাশগুপ্ত। আড্ডার মেজাজ ঘন হয়েছিল অচিরেই। মেঘের কোল থেকে হেসে উঠছিল রোদও। আর সেইসঙ্গে হাসিতে উচ্ছ্বল হয়ে উঠছিলেন ‘শব্দ জব্দ’-এর পরিচালক ও গল্পকার সৌরভ চক্রবর্তী, অন্যতম অভিনেত্রী মুমতাজ, ছবির ‘কানাই’ ওরফে কৌশিক রায়, ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ইশিতা সরকার, অন্যতম চিত্রনাট্যকার অভ্র কিংবা সুরকার অমিত বোসেরা। কথায়-কথায় উঠে আসছিল ঠান্ডার মধ্যে রজত কাপুরকে বারবার জলে চোবানোর নেপথ্যকাহিনি। নভেম্বরের শীতে তাগদার ঠান্ডায় কৌশিকের কস্টিউম বলতে ছিল একখানা স্যান্ডো গেঞ্জি। আড্ডার মধ্যেই জমে উঠছিল খুনসুটি। অনিতেশ আর মঞ্জিমা সেই মেজাজে সঙ্গত করছিলেন মাত্র।
আরও পড়ুন
ঋত্বিকবাবু পরিচালনা করলে ‘অযান্ত্রিক’-এ অভিনয় করতে চাই
শুটিং-এর ভিতরে হাজারো গল্প। শুটিং-এর আগে থেকেই বলা ভালো। উত্তরবঙ্গের তাকদায় রেকি করতে গিয়ে পছন্দমতো বাংলো পাওয়া মুস্কিল। তার মধ্যেই সৌরভ লিখে ফেলেছেন ‘বোকা পাহাড়’ গানের লিরিক। পাহাড়ে বসেই সেই গানে সুর দেন অমিত। এদিকে তিনি গিটার ফেলে গেছেন কলকাতাতেই। পাহাড় ঘুরে একটা গিটার জোগাড় করে আনলেন ইশিতা। তারপর আগুনের চারপাশে গোল করে বসে গেয়ে ফেলা হয় ‘বোকা পাহাড়’। এই মুহূর্তে ইন্টারনেট দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সেই গান। আড্ডার মধ্যেই সেই গান বেজে উঠল গিটারে। গলা মেলালেন সবাই।
আরও পড়ুন
‘মনে কষ্ট নিয়ে সিনেমা বানিয়ে লাভ নেই’
এই ইশিতাই রজত কাপুরকে দিয়ে বলিয়ে নিয়েছেন গুরুভার সব বাংলা সংলাপ। রীতিমতো প্রম্পট করেছেন পাশ থেকে। রজত কাপুরের পেশাদারিত্ব মুগ্ধ করেছে সৌরভ, মুমতাজ, কৌশিক সবাইকেই। কৌশিক বলছিলেন, রজত কাপুরই তাঁকে শিখিয়েছেন ভালো ও সফল অভিনেতা হতে গেলে ভালো মানুষ হওয়াটাও জরুরি। আয়তনে ছোটো চরিত্র হলেও কৌশিকের ভূমিকা এই ওয়েব সিরিজে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমন চরিত্রের প্রস্তাব ফেরানো যায় না। সুলগ্না চরিত্রের প্রস্তাব ফেরাতে পারেননি মুমতাজও। সুলগ্না চরিত্রেও যেন একটা ম্যাজিক আছে। রহস্যের সোয়েটারে বোনা এই চরিত্র করার পাশাপাশি অবশ্য লোভ ছিল রজত কাপুরের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগও।
আরও পড়ুন
‘আন্টার্কটিকা থেকে ফেরার পর, দেশ পত্রিকায় অভিজ্ঞতা লিখতে বললেন সাগরময় ঘোষ’
আড্ডার সবটুকু লিখে বলা অসম্ভব। তার জন্য শরিক হতে হবে আড্ডার। অর্থাৎ দেখতে হবে ভিডিওটি। আড্ডার শেষে আবির উড়ল এদিক-সেদিক। তারপর সামান্য মিষ্টিমুখ। আর বাকি যা যা উঠে এল? একটি ক্লিকে দেখে নিন সবটাই, উপরে রইল সেই ভিডিওর লিঙ্ক। যাঁরা এখনও ‘শব্দ জব্দ’ দেখেননি, দেখে নিন খুব শীঘ্রই, ঠকবেন না...