যত সময় এগোচ্ছে, আধুনিক হচ্ছে পড়াশোনার পরিবেশ। একটা সময় হাতে গোনা কয়েকটা বিষয় আর ন্যুনতম পরিকাঠামো নিয়ে শুরু হয়েছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি। বিশ্বায়ন, প্রযুক্তি আর আধুনিকতার হাত ধরে সেই গণ্ডিগুলো আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। সেই সারিতে পড়ছে সংবাদমাধ্যম এবং অন্যান্য মিডিয়াও। কিন্তু আমাদের পরিকাঠামো, সিলেবাস কি সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে যত্নশীল? একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে মিডিয়াতেও নানা দিক, নানা রাস্তা উঠে আসছে। সেই রাস্তাগুলো নিয়েই দীর্ঘদিন ভাবনাচিন্তা করছিল অ্যাডামাস ইউনিভার্সিটি। তারই সাম্প্রতিক পদক্ষেপ হিসেবে এখানে চালু হল পাঁচটি নতুন বিভাগ। কেবল সংবাদমাধ্যম নয়, মিডিয়ার নানা শাখার ভেতর যাতে সঠিকভাবে বেড়ে ওঠে ছাত্রছাত্রীরা— সেই চেষ্টা থেকেই নতুন এই পদক্ষেপ নেওয়া হল প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে…
গোটা পৃথিবী এখনও করোনার মারণগ্রাস থেকে বেরোতে পারেনি। জনজীবন স্বাভাবিক করার চেষ্টা জারি থাকলেও ভেতরে থেকে গেছে ভয়। তবে শুধু শরীরের ওপরই প্রভাব ফেলেনি এই আণুবীক্ষণিক ভাইরাস। পৃথিবী, সমাজ এবং কর্মক্ষেত্রের মানচিত্রটাই নতুন করে তৈরি করার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে এটি। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মিডিয়া ও সাংবাদিকতার অলিন্দেও পরিবর্তন আসছে। সেই কথা মাথায় রেখেই স্নাতকোত্তর পর্বে নতুন বিষয় যোগ করল অ্যাডামাস ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। বিষয়গুলি হল-
১) জার্নালিজমে এম.এ. কোর্স
২) এন্টারটেইনমেন্ট মিডিয়া নিয়ে এম.এ. কোর্স
৩) মিডিয়া টেকনোলজিতে এম.এসসি.
৪) কমিউনিকেশন ম্যানেজমেন্টে এমবিএ
৫) ইভেন্ট এবং এক্সপেরিয়েন্সিয়াল মার্কেটিং নিয়ে এমবিএ
হঠাৎ এমন বিষয় নিয়ে আলাদা বিভাগ তৈরি করার দরকার পড়ল কেন? প্রহরের সঙ্গে এই বিষয় কথা বললেন অ্যাডামাস ইউনিভার্সিটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এবং মিডিয়া বিভাগের ডিন অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার চৌধুরী। তিনি জানালেন, ‘সাংবাদিকতা ও মাস কমিউনিকেশনের যে সিলেবাসে আমরা পড়াশোনা করে অভ্যস্ত, সেখানে গেলে দেখা যায় সমস্ত বিষয় একসঙ্গে পড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সেখানে যেমন খবরের কাগজ থাকছে, তেমনই থাকছে ইলেকট্রনিক ও ওয়েব মিডিয়া। শুধু তাই নয়, থাকছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, প্রযুক্তি, অ্যাড মিডিয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো। একটা পর্যায় গিয়ে এই বিষয়গুলো কিন্তু আলাদাভাবেই পড়া উচিত। স্নাতকোত্তরে একজন পড়ুয়া যদি নির্দিষ্ট কোনো দিকে পড়তে চায়, তাহলে তো সেই দিকেই সম্পূর্ণ মনঃসংযোগ করা উচিত। এই ভাবনা থেকেই এই পাঁচটি কোর্সের উৎপত্তি। স্নাতক পেরিয়ে আসার পর পড়ুয়ারা নিজের পছন্দমতো দিকে যেতে পারে। সেটা প্রযুক্তি নিয়ে হতে পারে, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও তার খুঁটিনাটি নিয়ে পড়তে পারে বা অন্য কোনো বিষয়। তবে এই কোভিড পরিস্থিতিতে দেখা গেছে, ওয়েব মিডিয়া ব্যাপকভাবে আমাদের সামনে উঠে এসেছে। স্বাধীন সাংবাদিকতারও একটা মাধ্যম হয়ে উঠেছে এটি। ওয়েব মিডিয়া এবং ডিজিটাল জার্নালিজমই যে ভবিষ্যৎ, সেই বিষয় সন্দেহ নেই। তাই এই দিকটির প্রতি আমরা বেশি জোর দিচ্ছি। তবে অন্যান্য মাধ্যমও থাকবে সিলেবাসে।’
অ্যাডামাস ইউনিভার্সিটিতে স্নাতকোত্তর স্তরে এই বিষয়গুলি নিয়ে যদি কেউ পড়তে চায়, তবে তাঁকে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে আসতে হবে বলে জানালেন অধ্যাপক চৌধুরী। সব মিলিয়ে, মিডিয়ার চিরাচরিত সিলেবাসের বাইরে গিয়ে আরও বিস্তৃতভাবে বিষয়টিকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাই করছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যাতে ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন রাস্তার সন্ধান পান পড়ুয়ারা…
Powered by Froala Editor