Powered by Froala Editor
২০ বছরেও অধরা জনপ্রিয়তা, ‘মানি হাইস্ট’ বদলে দেয় প্রফেসরের জীবন
১/১০
‘লা কাসা ডে পাপেল’। সাম্প্রতিক সময়ে, লোকের মুখে মুখে ঘুরছে নামটা। হ্যাঁ, ‘মানি হাইস্ট’-এর (Money Heist) কথাই হচ্ছে। নেটফ্লিক্সের এই ওয়েব সিরিজ নিয়ে মানুষের উন্মাদনা পৌঁছেছে এক অন্য পর্যায়ে। সাড়া পড়ে গেছে বিশ্বজুড়ে। ‘মানি হাইস্ট’ শুধু রুদ্ধশ্বাস ব্যাঙ্ক ডাকাতির গল্পই বলে না; বরং এই সিরিজের মূল আকর্ষণ তার প্রাণবন্ত চরিত্ররা। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘এল প্রোফেসর’ (El Professor) যেন ঘোরের মধ্যে এনে দাঁড় করিয়েছে দর্শকদের।
২/১০
আলভারো মোর্তে (Alvaro Morte)। ৪৬ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ অভিনেতাই এখন জনপ্রিয়তার শিখরে। ‘এল প্রোফেসর’-এর চরিত্রে ইতিমধ্যেই কিংবদন্তি তিনি। অথচ, আজ থেকে দু’দশক আগে অভিনয় জগতে আত্মপ্রকাশ করলেও, তাঁর পরিচিতি সীমাবদ্ধ ছিল কেবলমাত্র স্পেনেই। ‘প্রোফেসর’-এর মতো তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কৌতূহলের শেষ নেই দর্শকমহলে।
৩/১০
১৯৭৫ সালে মোর্তের জন্ম স্পেনের কাডিজ প্রদেশের অ্যালগেসিরাস গ্রামে। পরে কর্ডোবাতে স্থানান্তরিত হয় তাঁর পরিবার। প্রাথমিকভাবে কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়েই পড়াশোনা করেছিলেন মোর্তে। অথচ, তাঁকে সর্বক্ষণই তাড়া করে বেড়াচ্ছে অভিনয়ের নেশা। স্নাতকতা শেষ করার আগেই তাই পথ পরিবর্তন করেন তিনি। ভর্তি হন কর্ডোবার ড্রামাটিক আর্ট কলেজে।
৪/১০
১৯৯৯ সালে স্নাতকতা শেষ করার পর ফিনল্যান্ডের ট্যাম্পেয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশোনার জন্য ভর্তি হন মোর্তে। তারও পরে আত্মপ্রকাশ অভিনয়জগতে। প্রথমে থিয়েটার, তারপর ছোটোপর্দায় অভিষেক। ২০০২ সালে স্প্যানিশ টেলিভিশন সিরিজ ‘হসপিটাল সেন্ট্রাল’-এ প্রথমবারের জন্য দেখা যায় তাঁকে। তারপর ‘বান্দোলেরা’, ‘আমার এন তিয়েমপোস’-সহ একাধিক টেলি-সিরিজে অভিনয় করলেও, পার্শ্বচরিত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন মোর্তে।
৫/১০
বড়ো পর্দায় তাঁর অভিষেক হয় ২০০৭ সালে। স্প্যানিশ লোকশিল্পী লোলা ফ্লোরেসের বায়োপিকে তাঁকে দেখা যায় প্রোটাগনিস্টের প্রেমিকের চরিত্রে। পরবর্তীতে আরও বেশ কিছু স্প্যানিশ চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও, খুব একটা জনপ্রিয়তা পায়নি তাঁর চরিত্ররা। শেষ পর্যন্ত রুপোলি পর্দায় তাঁর ভাগ্য খুলে দেয় ‘মানি হাইস্ট’।
৬/১০
তবে মানি হাইস্টে যে অভিনয় করতে পারবেন তিনি, তা কোনোদিনই ভাবেননি মোর্তে। ২০১০ সাল। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন স্প্যানিশ তারকা। বাঁ পায়ে ধরা পড়েছিল ম্যালিগন্যান্ট টিউমার। মোর্তের আশঙ্কা ছিল, হয়তো কেটে বাদ দিতে হবে তাঁর পা। গ্রাস করেছিল অবসাদ। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসার দৌলতে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন প্রোফেসর। তবে ক্যানসারের প্রভাব আজও রয়ে গেছে তাঁর শরীরে।
৭/১০
তবে পর্দার প্রোফেসরের সঙ্গে অভিনেতা অ্যালভারো মোর্তের বিস্তর মিল রয়েছে বাস্তব জীবনে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি নিজেও অধ্যাপকের কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। ফিনল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক হিসাবে পাঠ দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর।
৮/১০
শুধু অধ্যাপক কিংবা অভিনেতাই নয়, মোর্তে বাস্তব জীবনে একজন সফল ব্যবসায়ীও। স্পেনের বুকেই রয়েছে তাঁর আস্ত একটি থিয়েটার। ‘৩০০ পিস্তোলাস’ নামাঙ্কিত এই থিয়েটারটি ২০১২ সালে তৈরি করেন আলভারো মোর্তে। শুধু, তাই নয় একাধিক জনপ্রিয় নাটকের প্রযোজনার সঙ্গেও জুড়ে রয়েছে তাঁর নাম।
৯/১০
‘মানি হাইস্ট’-র পর তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশ ছুঁলেও, অত্যন্ত সাদামাটা জীবনধারণেই অভ্যস্ত আলভারো মোর্তে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মোর্তে জানান, বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে খুব একটা আগ্রহী ছিলেন না কোনোদিনই। বরং, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোই খুশি রাখে তাঁকে।
১০/১০
এতো গেল পেশার কথা। আর নেশা? অভিনয়ের বাইরে অভিনীত চরিত্রদের বিশ্লেষণ করাই মোর্তের অন্যতম ‘হবি’। আর রয়েছে, ভ্রমণ। ‘এল প্রোফেসর’ পছন্দের পর্যটন গন্তব্যের তালিকায় রয়েছে ভারতও। মহামারী কাটলেই যে তিনি ঢুঁ মারতে চলছেন একশো চল্লিশ কোটির দেশে তাও আগে থেকে জানিয়ে রেখেছেন তিনি।