ধর্মত্যাগ আর অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত হবে না সুদানে। নিষিদ্ধ হল মহিলাদের যৌনাঙ্গ বিকৃতি (এফজিএম) এবং অনুমতি ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারবেন মহিলারা। এই সব সংস্কারমূলক পদক্ষেপের জন্য এখন রীতিমতো প্রশংসিত হচ্ছে সুদানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
ওমর আল-বশিরের নেতৃত্বে সুদানের সরকার ৩০ বছর পর এই সকল বৈষম্যমূলক নীতি বাতিল করায় উদারীকরণের দিকে এগুলিকে একটি 'দুর্দান্ত প্রথম পদক্ষেপ' বলে অভিহিত করা হয়েছে।
নির্যাতনবিরোধী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘রেড্রেস’ এবং সুদানে অবস্থিত ‘আফ্রিকান সেন্টার ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিস স্টাডিজ’-এর মতে এই সংস্কারগুলি সুদানকে নারী ও সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কাঠামোগত হিংসতা দূর করার দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
সুদানের বিচারমন্ত্রী নাসেরদিন আবদুলবারি গত সপ্তাহেই ঘোষণা করেছিলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসা কমাতেই এই সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছিল। এছাড়াও তিনি বলেছিলেন, অমুসলিমদের গোপনে মদ খাওয়ায় আর কোনো আপত্তি নেই। স্বাধীনতার দিকে এই সিদ্ধান্তগুলিকে বড় পদক্ষেপ বলেই মনে করেছেন তিনি।
সুদানের কুখ্যাত ‘ধর্মভ্রষ্ট’ আইনে মেরিয়াম ইব্রাহিমের কথা উল্লেখযোগ্য। তাঁর মা খ্রিস্টান হলেও, বাবা ছিলেন মুসলিম। মায়ের ধর্মই পরে মেরিয়াম গ্রহণ করতে চাইলে, মৃত্যুদণ্ড নির্ধারিত হয় তাঁর জন্য। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক হইচই হলে, ২০১৮ সালে মুক্তি পান মেরিয়াম।
তারপরেই এই কুখ্যাত আইনগুলি মুছে ফেলার তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত হয় ১৫২ নম্বর অনুচ্ছেদও, যেখানে জনসাধারণের মধ্যে ট্রাউজার পরিধান করার আভিযোহে মহিলাদের বিরুদ্ধে অন্তত ৪০টি অভিযোগ দায়ের ছিল।
আরও পড়ুন
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নার্স হোচিমিন, বাংলাদেশের ট্রান্সজেন্ডার আন্দোলনের অন্যতম মুখও তিনিই
যদিও এখন কত তাড়াতাড়ি এই সকল আইনগুলির সঠিক রূপায়ণ শুরু হয়, সেই দিকেই তাকিয়ে দেশের সাধারণ জনগণ। যদিও এই আইন রূপায়ণের সঙ্গে সঙ্গেই এই সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধিও জরুরি বলে মনে করেছেন ওই দেশের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
Powered by Froala Editor