ঘড়ির কাঁটার পরিচলন, ক্যালেন্ডারের তারিখ— এই সবকিছুই নির্দেশ করে ক্রমশ গড়িয়ে চলেছে সময় (Time)। কিন্তু সময়ের অস্তিত্বই যদি না থাকে ব্রহ্মাণ্ডে? ভাবছেন এ আবার কেমন প্রশ্ন! সময় ছাড়া মানবজীবন তো বটেই, বিজ্ঞানও অচল। পদার্থবিদ্যার নয়া তত্ত্ব ইঙ্গিত দিচ্ছে তেমনটারই। যদিও সময়ের অস্তিত্ব থাকুক আর না-ই থাকুক, তাতে মানবজীবনে কোনো প্রভাব পড়বে না বলেই অভিমত বিজ্ঞানীদের।
গত এক শতাব্দী ধরেই মহাবিশ্বের ঘটনাপ্রবাহকে ব্যাখ্যা করতে মূলত দুটি তত্ত্বের সাহায্য নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা— আপেক্ষিকতাবাদ এবং কোয়ান্টাম বলবিদ্যা। প্রথমটি মহাকর্ষ এবং বস্তুর গতির ওপর ভিত্তি করে ধারণা দেয় সময়ের। দ্বিতীয় তত্ত্বটি ভৌত কণা এবং তাদের মিথস্ক্রিয়াকে বিশ্লেষণ করে। পদার্থবিদ্যার দুটি তত্ত্বেরই গুরুত্ব অপরিসীম। তবে এই দুই তত্ত্বের মধ্যে বিরোধও রয়েছে বিস্তর। এই সমস্যার সমাধান করতেই এক নতুন তত্ত্বের প্রস্তাব দিয়ে আসছেন বিজ্ঞানীরা।
না, আজকের কথা না। নব্বই দশকের শেষের দিক থেকেই এই নতুন তত্ত্ব প্রণয়নের প্রস্তাব তুলেছিলেন বিজ্ঞানীরা। যে তত্ত্ব পদার্থবিদ্যার জগতে পরিচিত ‘কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটি’ নামে। এই তত্ত্ব একাধারে যেমন মহাকর্ষ ও ব্রহ্মাণ্ডের বৃহত্তর ঘটনাগুলিকে ব্যাখ্যা করতে সক্ষম, তেমনই ক্ষুদ্র মাইক্রোস্কোপিক স্কেলেও প্রযোজ্য। কিন্তু সময়ের অস্তিত্বকে কীভাবে নস্যাৎ করছে এই তত্ত্ব?
কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটি তত্ত্বের কেন্দ্রেই রয়েছে স্ট্রিং থিওরি। আমরা সাধারণত চতুর্মাত্রিক অবস্থার সঙ্গে পরিচিত। অর্থাৎ, তিনটি স্থানীয় স্থানাঙ্ক এবং একটি সময় স্থানাঙ্কের মাধ্যমেই চিহ্নিত করা হয় কোনো ঘটনাকে। তবে স্ট্রিং তত্ত্বানুযায়ী, ১১ মাত্রার স্ট্রিং-এর স্পন্দনই কোনো একটি ভৌত কণার প্রতিরূপ। অর্থাৎ স্থান, কাল কোনোটারই ব্যবহার না করে কোনো ঘটনা কিংবা কণার অস্তিত্বকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব ১১ মাত্রার স্ট্রিং-এর কম্পনের মাধ্যমে। যদিও স্ট্রিং থিওরি বা স্ট্রিং তত্ত্ব গাণিতিকভাবে প্রমাণিত হলেও, এখনও পর্যন্ত তার পরীক্ষিত ফলাফল পাননি গবেষকরা।
আরও পড়ুন
রহস্যময় কণার বিশ্লেষণে চাঞ্চল্যকর তথ্য! বদলাতে পারে পদার্থবিদ্যার ধারণা
পদার্থবিদ্যার জগতে সমাধান না হওয়া নানান রহস্য এবং মহাজাগতিক ঘটনার বিশ্লেষণে এই তত্ত্ব আগামীদিনে সাহায্য করবে বিজ্ঞানীদের। এমনটাই অভিমত বিশেষজ্ঞদের। তবে তার জন্য বদলে যাবে মানুষের সাধারণ জীবন। অর্থাৎ, সময়ের ধারণাকে মুছে ফেলা হবে না একেবারেই। শুধু বদলে যাবে তার প্রয়োগিক বৈজ্ঞানিক দিকটা…
আরও পড়ুন
প্রথম ভারতীয় পদার্থবিদ হিসাবে বোল্টজম্যান পদক পেলেন ডঃ দীপক ধর
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কৃত্রিমভাবে তৈরি ‘ভারি ইলেকট্রন’, পদার্থবিদ্যার নতুন দিগন্তের সন্ধান দিলেন বঙ্গসন্তান