অস্কারের বিপুল আয়োজন সত্ত্বেও কি ব্যর্থতার মুখ দেখবে হলিউড?

অস্কার পুরস্কার অনুষ্ঠানের আর মাত্র ৩ দিন বাকি। সারা পৃথিবীর বিনোদন জগত প্রতি বছরের মতো এবছরও সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায়। তবে সেইসঙ্গে জমা হয়েছে খানিকটা দুশ্চিন্তাও। এক বছরের বেশি সময় ধরে অতিমারী করোনার কারণে বিনোদন জগতের অবস্থা শোচনীয়। এর মধ্যে বেশ কিছু পুরস্কার অনুষ্ঠানও দর্শকদের আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। গ্র্যামি পুরস্কারের দর্শক সংখ্যা কমেছে ৫৩ শতাংশ। আর গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ৬০ শতাংশ। অস্কার পুরস্কার অনুষ্ঠানের পরেও কি আবার ব্যর্থতার মুখ দেখবে হলিউড?

আগামী ২৫ এপ্রিল এবিসি ব্রডকাস্ট মাধ্যমে ঘোষিত হবে অ্যাকাডেমি অফ মোশন পিকচার্স আয়োজিত অস্কার পুরস্কারের প্রাপকদের নাম। সেইসঙ্গে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই প্রতি বছরের মতো আয়োজন করা হবে বিশেষ অনুষ্ঠান। সম্প্রতি সমগ্র অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন অনুষ্ঠানের তিন প্রযোজক। পরিকল্পনায় সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলার বিষয়েই। তবে তার জন্য অনুষ্ঠানের জৌলুস কমাতে রাজি হননি কেউই। তাই ব্রডকাস্ট মাধ্যমের অনুষ্ঠানেও রেড কার্পেট থেকে শুরু করে পুরস্কার বিজেতাদের কথপোকথনের আসর, সবই থাকবে। তার জন্য বিপুল অর্থও বরাদ্দ করা হয়েছে। অস্কার পুরস্কার তো আর পাঁচটা অনুষ্ঠানের মতো সাদামাটা হতে পারে না। লাইভ টেলিকাস্টের জন্য ইতিমধ্যে ২০টি স্যাটেলাইটের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

তবে এতকিছুর পরেও এ-বছর দর্শকের সংখ্যা ১ কোটির নিচেই থেকে যাবে বলে মনে করছেন অনেকে। ২০১৪ সালে অস্কার পুরস্কারের দর্শক সংখ্যা ছিল ইতিপূর্বে সবচেয়ে কম। সেবছর ২.৩ কোটি মানুষ অনুষ্ঠান দেখেছিলেন। এবছর সংখ্যাটা তার চেয়েও অনেক কম হবে, সে-বিষয়ে সন্দেহ নেই। বিশেষজ্ঞদের অনেকে মনে করছেন, বিগত এক বছরের বেশি সময় ধরে বিনোদন জগত একরকম স্তব্ধ। সিনেমার সঙ্গে মানুষের একটা অভ্যাসগত বিচ্যুতি ঘটেছে। অস্কার পুরস্কারের মনোনয়নে অবশ্য সিনেমার পাশাপাশি বহু ওয়েব সিরিজও আছে। কিন্তু সেসবের জনপ্রিয়তা সিনেমার তুলনায় নগণ্য।

তবে এই সাময়িক প্রভাবের বাইরেও বেশ কিছু কারণের কথা বলছেন সমীক্ষকরা। প্রথমত, এবিসি-র মতো পুরনো ব্রডকাস্ট মাধ্যমের সঙ্গে তরুণ প্রজন্মের অনেকেই অভ্যস্ত নয় বলে উঠে আসছে ‘গাটস প্লাস ডেটা’-র সমীক্ষায়। তাছাড়া এক এক দিনের অনুষ্ঠান চলে প্রায়  ৩ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। অনুষ্ঠানের সময়সীমা কমিয়ে আনলে অনেক বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছানো যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে অ্যাকাডেমি এইসমস্ত বিষয়ের দিকে নজর দিতে রাজি নয়। প্রযোজকদের স্পষ্ট বক্তব্য, অস্কার পুরস্কারের অনুষ্ঠানের আভিজাত্য কোনোভাবেই ক্ষুণ্ণ করা যাবে না। আর পাঁচটা অনুষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে রাজি নয় অস্কার। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন বিনোদন শিল্পের জগৎ রীতিমতো ধুঁকছে, তখন এই বিপুল বাজেট নিয়ে অস্কারের আয়োজন প্রয়োজন ছিল কিনা, এমন প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।

আরও পড়ুন
অস্কারজয়ী ‘গান্ধী’-র প্রযোজক ছিলেন তিনি; প্রয়াত সাহিত্যিক-সাংবাদিক অনিল ধারকার

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
অস্কারের মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করবেন প্রিয়াঙ্কা-নিক জুটি, উচ্ছ্বসিত অভিনেত্রী