ইতিহাস বইয়ের পাতা ওল্টালে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি, নাম, আর কিছুটা কীর্তি। দেশকে স্বাধীন করার জন্য নিজেদের জীবন আহুতি দিয়েছিলেন এঁরা। কিন্তু, এঁদের অবদানকে এতটুকু ছোটো না করেও বলা যায়, এসব নামের আড়ালে অজানাই রয়ে গেছেন আরও অন্যান্য সাধারণ মানুষ। পরোক্ষভাবে তাঁরা সাহায্য করেছেন সংগ্রামী বীরদের। তাঁদের ভাগ্যে জোটেনি অবদানের স্বীকৃতি, জানা যায়নি তাঁদের পরিচয়।
চট্টগ্রামের সেই ছোটো মেয়েটি যেমন…
১৮ এপ্রিল ১৯৩০—মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে এক বৈপ্লবিক অভ্যুত্থানের ফলে, সাময়িকভাবে হলেও, গোটা চট্টগ্রাম শহর ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির কব্জায় চলে এসেছিল। হয়তো চূড়ান্ত সাফল্যও আসত। এল না। আগুন লাগাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে যাওয়া কিশোর বিপ্লবী হিমাংশুকে নিরাপদ আস্তানায় পৌঁছে দিয়ে আসতে চারজনের একটি দল শহরের দিকে চলে যায়, কোনো এক অজ্ঞাত কারণে মূল দলটি এই চারজনের সঙ্গে মিলিত হতে পারেনি, এবং সেটাই হয়ে গেছিল চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের সুবৃহৎ এক ত্রুটি।
এই চারজন ছিলেন গণেশ ঘোষ, অনন্ত সিংহ, আনন্দ গুপ্ত, এবং মাখন ঘোষাল।
আরও পড়ুন
ইংরেজ-হত্যার জন্য হারমোনিয়ামে অস্ত্র পাচার, ছদ্মবেশে পুলিশকে ধোঁকা বিপ্লবী উজ্জ্বলার
নানা আস্তানা বদলে রেলযোগে চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়ার পথে ফেণী স্টেশনে পুলিশের জেরার মুখে পড়ে যান এঁরা। সেখানে অনন্ত সিংহের অভূতপূর্ব সাহসিকতায় পুলিশের দলকে আহত করে চারজন পালিয়ে যান, কিন্তু একে অন্যের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে।
আরও পড়ুন
ক্ষুদিরামকে নিয়ে সিনেমা, তথ্যের যোগান দিলেন বিবেকানন্দ ও অরবিন্দের বিপ্লবী ভাইয়েরা
স্টেশনের কাঁটাতার টপকে পালানোর সময়ে অনন্ত সিংহ গিয়ে পড়েন এক কাদাভর্তি পুকুরে। সেখান থেকে উঠে হাঁটতে থাকেন গ্রামের দিকে—স্টেশন থেকে, লোকালয় থেকে যত দূরে যাওয়া যায়। ফেণীর পূর্ব-পরিচিত অভয় আশ্রমে আশ্রয় পাবেন ভেবেছিলেন, তাও পেলেন না।
রাতভর হাঁটলেন। কত যে মাঠ, ঝোপ-ঝাড়, খানা-খন্দ কাদা, জল, নর্দমা পেরিয়ে চলতে হল, তার সীমা নেই। সারা গায়ে পুরু কাদার প্রলেপ। পিস্তলে গুলি মাত্র একটা, রিভলভারের ইজেক্টর স্প্রিং অকজো, সর্বক্ষণের সঙ্গী ওই দুই অস্ত্রকে মাটির মধ্যে পুঁতে আবার হাঁটা শুরু। কিছুক্ষণের জন্য কেবল একটা পাহাড়ের মাথায় বিশ্রামের ঘুম।
পাহাড় থেকে নামলেন যখন, মাত্র ছয় ইঞ্চির মতো কাপড় শরীরে অবশিষ্ট। কাদামাখা অর্ধনগ্ন শরীর, এই অবস্থায় স্থির করলেন কালা, বোবা ও অর্ধ পাগল সাজাই একমাত্র বাঁচার পথ। আবার পথ চলা শুরু করলেন। তৃষ্ণায় ছাতি ফেটে যাচ্ছে। কোথাও জলের নামগন্ধ নেই। মাথার উপর এপ্রিল মাসের সূর্যের প্রখর তাপ। হঠাৎ কোনো বিপদের আশঙ্কায় লোকালয় ও ট্রাঙ্ক রোড এড়িয়ে চলছিলেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত, বিপদ এল কতকগুলো ছোটো ছেলের বেশে। অর্ধ-নগ্ন ‘পাগল’কে দেখে তাদের মনে কৌতুহলের শেষ নেই। তারা নানাপ্রকার টিটকিরি দিতে লাগল। কিছুক্ষণ পরে শুরু হল ওঁর দিকে ছোটো-বড়ো পাথর ছোঁড়া। যে কোনও মুহূর্তে আঘাত প্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা। ছেলের দল তাঁকে প্রায় আধ মাইল মতো তাড়িয়ে নিয়ে চলল। কিছু দূর গিয়ে অবশ্য তারা যখন বুঝল, এত গালমন্দ, এত টিটকিরি ওঁকে মোটেই বিচলিত করছে না, তখন প্রায় আধ ঘণ্টা পর তারা রণে ভঙ্গ দিল। কিন্তু, এবার বিপদ অনুভব করলেন অন্য দিক থেকে। এতক্ষণ এদের তাড়নায় খিদে তেষ্টা ভুলে ছিলেন, এবারে যেন কোনোভাবেই এই অনুভূতিদের এড়িয়ে যাওয়া যায় না।
এমন সময়ে প্রায় ছ’সাতশ গজ দূরে নজরে এল একটা বড়ো পাকা বাড়ি। বাড়ির এলাকা উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। গেট থেকে রাস্তাটা সোজা ফেণী-বিলোনিয়ার বড়ো রাস্তায় গিয়ে পড়েছে। বাড়ির ঠিক বাইরেই বাঁধানো ঘাট-সমেত একটা দীঘি। বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই একটা মন্দির। খুব বড়ো না হলেও মাঝারি মাপের একটা মন্দির যা দেখে গৃহকর্তার রুচিশীলতা সম্বন্ধে সম্ভ্রম জাগে।
দীঘি দেখেই আঁজলা ভরে জল খেয়ে অনন্ত সিংহ পায়ে পায়ে বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে ঢুকলেন। তখন প্রায় বেলা দুটো। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার, কাউকেই আশেপাশে দেখা যাচ্ছে না। ইচ্ছে ছিল, কোনো বয়স্ক ব্যক্তিকে পেলে হয়তো পরিস্থিতি বুঝিয়ে বলা যাবে। কিন্তু আবার আগের মতোই বাড়ির উঠোনে কিছু বাচ্চার চোখে পড়ে গেলেন, এবং এরাও তাঁর অদ্ভুত পোশাক দেখে টিটকিরি দেওয়া শুরু করল। সহানুভূতির আশায় অনন্ত প্রথমে বসলেন, তারপর যেন বসে থাকতে পারছেন না, এই রকম ভাণ করে আস্তে আস্তে শুয়ে পড়লেন। ছেলের দল তাঁকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ইশারা করতে লাগল, যদিও দূর থেকে।
দূরে দাঁড়িয়ে, এক-দুপা এগিয়ে-পিছিয়ে দুর্ধর্ষ বিপ্লবীটিকে সেই ছেলের দল ক্রমাগত বলছে ‘বেরিয়ে যা, বেরিয়ে যা’। বাড়ির কোনো বয়স্ক লোকেরও দেখা নেই যে, তাদের কিছু বলবেন। অবশ্য, এই কেউ এসে পড়লে ওই বোবা-কালার অভিনয়ই করতে হত। অনন্ত সিংহ উঠবার উপক্রম করছেন, এমন সময় একটি কিশোরী কণ্ঠ কানে এল তাঁর—“কেন ওকে বিরক্ত করছিস? তোদের কি একটুও দয়া-মায়া নেই?”
অনন্ত তাকিয়ে দেখলেন, ছোটো একটি মেয়ে, ন-দশবছর বয়স হবে, বোধহয় বাচ্চাদের ভিড়ের পিছন দিকে ছিল এতক্ষণ। দুদিন ধরে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘোরা, এক ফোঁটা জলের জন্য হাহাকার, পেটে এক মুঠো খাবার জোটেনি—এমন অবস্থায় ওইটুকু মেয়ের কণ্ঠস্বর, যেন মা এসে ডাকছেন তাঁকে। ওই মারমুখী ছেলেদের প্রতি শত অভিযোগ নিয়ে, অভিমান ভরে চলে যেতে উদ্যোগী হয়েছিলেন অনন্ত, সেই সময়ে এই বালিকার কণ্ঠস্বরে প্রাণ ফিরে পেলেন।
মেয়েটি ইশারা করে তাঁকে বসতে বলল। তারপর অন্যান্য সঙ্গীদের দিকে তাকিয়ে আদেশের সুরে বলে গেল—“তোরা ওকে বিরক্ত করবি না, ওর খিদে পেয়েছে, আমি ওর জন্য ভাত নিয়ে আসছি।” বিপন্ন বিপ্লবীটি যেন স্বপ্ন দেখছেন। ঘরোয়া ভাবে শাড়ি পরা এক কিশোরী কতখানি দৃঢ়তার সঙ্গে, কতখানি দয়াপরবশ হয়ে এই অজানা, অচেনা ‘পাগল’কে খাবার পরিবেশন করতে উন্মুখ। খানিকক্ষণ পর কচি হাতে করে কলাপাতায় সাজিয়ে সে নিয়ে এল ভাত, ডাল, তরকারি। তবে তারও মনে পাগলকে নিয়ে অজানা ভয়, তাই কলাপাতায় সাজানো ভাত সে রেখে দিল পনের হাত দূরে। ইশারায় দীঘির পাড়ে বসে খেতে বলল।
ভাত দেখার পর আর অপেক্ষা করতে পারছিলেন না অনন্ত, কিন্তু তুখোড় মস্তিষ্ক বলছে, পাগলের অভিনয় করে যেতেই হবে। তাই, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে, এলোমেলোভাবে দীঘির পাড়ে বসে খাওয়া শুরু করলেন। জীবনে পোলাও-মাংস অনেক খাওয়ার সুযোগ এসেছে, কিন্তু সেদিনের সেই ছোট্টো মেয়েটির কচি হাতে পরিবেশন করা ওই ভাত, ডাল, তরকারির কাছে সেই সুস্বাদও বুঝি ম্লান।
সেদিনের ঘটনাবলীর পর পঁয়তাল্লিশ বছর অতিবাহিত। চট্টগ্রামের বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ফাঁসি হল মাস্টারদা এবং তারকেশ্বর দস্তিদারের। কয়েকজনের আন্দামানে দ্বীপান্তর। স্বাধীনতার কিছু আগে সেলুলার জেলের অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে মুক্তি পেয়েছিলেন অনন্ত সিংহ, গণেশ ঘোষ, লোকনাথ বল, প্রমুখ। অনেকেই কলকাতায় স্থায়ী ভাবে বাস করতে শুরু করলেন। ১৯৪৭-এ এল স্বাধীনতা, এল দেশভাগ, ভারতকে স্বাধীন করতে যে চট্টগ্রামে মরণপণ লড়লেন মাস্টারদা-অনন্তরা, রাতারাতি সেই চট্টগ্রাম হয়ে গেল অন্য এক দেশ, অন্য এক রাষ্ট্র।
১৯৪৭ সালের পর অনন্ত সিংহ জীবনধারণ করতে নানা ধরনের জীবিকা বেছে নিয়েছিলেন—চলচ্চিত্র প্রযোজনা (‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’ তাঁর প্রযোজনার একটি উল্লেখযোগ্য ছবি), মোটর গাড়ির ডিলারশিপ প্রভৃতি। কিন্তু, সংসদীয় গণতন্ত্রের অধীনে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অপছন্দ ছিল তাঁর, ষাটের দশকের শেষের দিকে তাই নতুন একটি রাজনৈতিক দল তৈরি করলেন—রেভলিউশনারি কম্যুনিস্ট কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া। আবারও একটা সশস্ত্র আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছিলেন অনন্ত। পরিকল্পনা-মাফিক, ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৯ সালের মধ্যে, পার্ক স্ট্রিট পোস্ট অফিস, আলিপুরের ন্যাশনাল গ্রিন্ডলেজ ব্যাঙ্ক, স্টেট ব্যাঙ্কের পার্ক স্ট্রিট শাখা, এমন বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা ডাকাতি করেন। এই ডাকাতির মাথা যে অনন্ত সিংহ, এটা বের করতে তদানীন্তন পুলিশ বিভাগের কালঘাম ছুটে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, ১৯৭১ সালে পুলিশ ওঁকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
শুনে মনে হবে, এতরকম ঘটনার ঘনঘটায় সেদিনের সেই ছোটো মেয়েটি কোথাওই বুঝি ছিল না।
অনন্ত সিংহ তাঁর বইয়ের প্রথম খণ্ডে এই ঘটনা নিয়ে লিখেছিলেন—“ভারতের স্নেহময়ী নারীর প্রতিমূর্তি সেই শ্রদ্ধেয়া বালিকাটির প্রতি আজ আমার আবেদন, যদি কোনদিন আমার এই লেখাটি পড়ে এই সামান্য ঘটনার স্মৃতি তাঁর মনে জাগে তবে কোন আপত্তি না থাকলে একটি চিঠি লিখলে খুশি হবো।”
স্বাধীন ভারতের সংশোধনাগারে শুরু হল অনন্ত সিংহের জেলজীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়, ইতিমধ্যে ‘চট্টগ্রাম যুব-বিদ্রোহ’-র দুখণ্ড প্রকাশিত হয়ে গেছে। এমন সময়ে, জেলে তাঁর নামে এল একটা চিঠি, পাঠানো হয়েছে নিমতা থেকে, প্রেরিকা কে এক শ্রীমতী ঊষারাণী নন্দী। চিঠির তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫। চিঠিটা খুলে পড়তে শুরু করলেন অনন্ত।
পড়তে পড়তেই বুঝতে পারলেন, সেই বহু-আকাঙ্খিত চিঠিই অবশেষে এসেছে, বই প্রকাশেরও প্রায় বারো বছর পরে। ১৯৩০ সালের এপ্রিল মাসে বিলোনিয়া-ফেণী সড়ক পথের ধারের প্রশস্ত এক বাড়িতে এক অর্ধনগ্ন ‘উন্মাদ’কে যত্ন করে খাইয়েছিল যে ন-দশ বছরের ছোট্টো মেয়েটি, সে-ই আজকের প্রবীণা উষারাণী নন্দী। তিনি জেলে এসে দেখা করতে চান।
অনন্ত সিংহ কোনোদিন ভাবেননি, এও সম্ভব হতে পারে। চিঠির জবাবে মনের আকুলতা ও দেখা করবার ব্যাকুলতা জানিয়ে একটি পোস্ট-কার্ড লিখলেন। জেলের বাকিদের মধ্যেও ছড়িয়ে গেল খবর। জেল-সুপার রণেন্দ্রনাথ মুখার্জিও এই ঘটনায় উৎসাহিত হলেন, কারণ তিনিও ততদিনে ‘চট্টগ্রাম যুব-বিদ্রোহ’ পড়ে ফেলেছেন, এই ঘটনা তাঁর জানা। কমরেড সমীর মোদকের কাছে জানতে পারলেন, ২২ ফেব্রুয়ারি হবে সেই সাক্ষাৎ।
আলিপুর জেলে এই ঘটনায় সাজ-সাজ রব পড়ে গেল। নির্ধারিত সময় চারটের আগেই ঊষারাণী জেলরের কামরায় উপস্থিত। অনন্ত সিংহের মনে শঙ্কা—ঊষারাণীকে কী বেশে দেখবেন। জেলরের ঘরে প্রবেশ করতেই অবশেষে দেখা হল দুজনের। প্রবীণা ঊষারাণীর সঙ্গে তাঁর ছেলে, বিপ্লব। দুজনেই অনন্ত সিংহকে প্রণাম করেন।
প্রাথমিক আলাপ-পর্ব শেষ হলে অনন্ত সিংহের অন্যান্য বন্ধুরা ঊষারাণীকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানান। এহেন আয়োজন দেখে ‘বোন’টি সেদিন বলেছিলেন—“আমাকে কেন ভাই তোমরা অভিনন্দন জানাচ্ছ? আমি সেদিন না জেনেই একজন ভিখারি ও ক্ষুধার্তকে মাত্র কয়েক মুঠি খেতে দিয়েছি। এতে অভিনন্দন বা প্রশংসা পাওয়ার তো কিছু নেই। অবশ্য আজ যখন জেনেছি যে, সেইদিন আমার অজ্ঞাতেই যাঁকে খেতে দিয়েছিলাম তিনি আর কেউ নয়—আমার এই দাদাটিই, তখন তাঁর বিপদের সময় সাহায্য করার আমার সৌভাগ্য হয়েছিল, সেইটিই হল আমার সবচেয়ে বড়ো পুরস্কার। আমার তো আর কিছুর প্রয়োজন নেই। এই সম্পদই আমার জীবনে একটি অমূল্য ও গৌরবময় রত্নস্বরূপ হয়ে থাকবে যে, স্বাধীনতা যুদ্ধে একজন বিপ্লবী সৈনিকের একান্ত প্রয়োজনে তার সেবায় অংশগ্রহণের সুযোগ আমিও পেয়েছিলাম।”
সশস্ত্র পথে বিপ্লব সঠিক কিনা, সে তর্ক চলবেই। ‘মৃত্যুর বদলা মৃত্যু’ আদৌ মুক্তি দিতে পারে কিনা, সে তর্কও চিরকালের। বিপ্লবী হতে গেলে চরম কৃচ্ছ্রসাধনই একমাত্র পথ কিনা, বিতর্ক হবে তা নিয়েও। কিন্তু, সেসব ভাবগম্ভীর, তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের উর্ধ্বেও কিছু থেকে যায়, সে থেকে যাওয়ার নাম ভালোবাসা। হাজার হাজার এমন অনন্ত-ঊষারাণী অধ্যায়ের মতো ভালোবাসা।
তথ্যসূত্র –
চট্টগ্রাম যুব-বিদ্রোহ (প্রথম খণ্ড) – অনন্ত সিংহ (সেন অ্যান্ড কোম্পানি, প্রথম প্রকাশ ১৯৫৯)
আমি সেই মেয়ে – অনন্ত সিংহ (র্যাডিক্যাল ইম্প্রেশন, প্রথম প্রকাশ ২০১৫)
Powered by Froala Editor