১৫ বছর আগেই মহামারী নিয়ে লিখেছিলেন উপন্যাস, প্রকাশিত হল সম্প্রতি

করোনার জেরে গোটা বিশ্ব একপ্রকার ভেঙে পড়েছে। সব জায়গায় হাহাকার, ঘরবন্দি জীবন। এই জাঁতাকলে পড়েছিলেন স্কটিশ লেখক পিটার মে’ও। অন্যান্য আরও অনেকের মতোই এই অসহ্য জীবন তাঁরও সহ্য হচ্ছিল না। চারিদিকে যেন আতঙ্ক। হঠাৎই তাঁর মনে পড়ল একটা ঘটনার কথা। ১৫ বছর আগে তিনি একটি উপন্যাস লিখেছিলেন; প্রেক্ষাপট ছিল সেই মহামারীই। এমন একটি মুহূর্তে নিজের অপ্রকাশিত লেখাটির কথা কেন মনে পড়ল তাঁর? এর পরের ঘটনাটা নিয়েই এই প্রতিবেদন। ১৫ বছর আগে মহামারী নিয়ে লেখা তাঁর উপন্যাসটি শেষ পর্যন্ত অনলাইন মার্কেটে প্রকাশিত হল। নাম, ‘লকডাউন’।

এর বিশেষত্ব কী, জানতে একটু পেছনে তাকাতে হবে। সালটা ২০০৫। মাত্র বছর কয়েক আগেই ইংল্যান্ডে মারাত্মক আকার নিয়েছিল বার্ড ফ্লু। সেই সময় ওই ঘটনা কাছ থেকে দেখেছিলেন লেখক পিটার মে। কী ভাবে গোটা ইংল্যান্ডে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, দেখেছিলেন তিনি। সেই ঘটনা থেকেই ২০০৫-এ তিনি একটি উপন্যাস লেখেন। নাম দেন ‘লকডাউন’। যথারীতি প্রকাশকের কাছেও পাণ্ডুলিপি নিয়ে যান। কিন্তু ব্যর্থ হন এবার। প্রকাশকের ঠিক পছন্দ হল না। কেমন যেন অবাস্তব সব ঘটনা! ফিরিয়ে দিয়েছিলেন পিটারকে। তারপর থেকে ঘরের কোণেই পড়েছিল লেখাটি।

মাঝখানে কেটে যায় ১৫টি বছর। গোটা বিশ্বে আছড়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। ২১ লাখের ওপর মানুষ আক্রান্ত হন। মৃতের সংখ্যাও এক লাখ ছাড়িয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে অন্যান্যদের সঙ্গে ঘরবন্দি হয়ে পড়েন পিটার মে-ও। এমন সময় টুইটারে এক ভক্তের মেসেজ নজরে পড়ে তাঁর। করোনা তাণ্ডব ও লকডাউন নিয়ে কিছু লেখার কথা জানান সেই ব্যক্তি। এক ঝটকায় মনে পড়ে যায় সেই লেখাটির কথা। খুঁজে বের করেন তিনি। নিজেই পড়লেন একবার, তারপর চমকে গেলেন। ১৫ বছর আগে আজকের দিনের পরিস্থিতি তিনি কী করে লিখলেন? সঙ্গে সঙ্গে পিটার মে যোগাযোগ করেন ওই প্রকাশকের সঙ্গে। পাণ্ডুলিপি পাওয়ার পর এক নিমেষে পড়ে ফেলেন সেটা। আর কিছু বলতে হয়নি। ১৫ বছর আগে যে বইটি তিনি প্রকাশ করেননি, এবার সেই বইটিই প্রকাশ করতে রাজি হলেন। ছাপাখানার মুখ দেখল ‘লকডাউন’।

গোটা উপন্যাসটির পটভূমি হল লন্ডন। মূলত থ্রিলার এই বইটিতে এই শহরকে কল্পনা করা হয়েছে একটি বিশ্বব্যাপী মহামারীর এপিসেন্টার হিসেবে। যেখানে সমস্ত নাগরিক ঘরের ভেতর বন্দি; লকডাউন চলছে। আপাতত শুধু অ্যামাজন ইউকে-তেই কিন্ডল মাধ্যমে বইটি পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে এবং অডিওবুক হিসেবে প্রকাশ হবে ৩০ এপ্রিল।

More From Author See More