নব্বই বছর ধরে জঙ্গলে একাই দিন কাটিয়েছে। বিজ্ঞানীরা কেউই তার সন্ধান জানত না। ১৪০০ হেক্টর বনভূমিতে তার বন্ধু বলতে কেউ ছিল না। বলছি একটি স্যুইনো কাছিমের কথা। বিশ্বের সবচেয়ে বিরল কাছিম বলে পরিচিত যে প্রজাতি। স্বাভাবিকভাবেই এই মহিলা কাছিমের সন্ধান পেয়ে উচ্ছ্বসিত বিজ্ঞানীরা। নিশ্চিত বিলুপ্তির হাত থেকে হয়তো বাঁচানো যাবে একটি প্রজাতিকে।
অক্টোবর মাসে ভিয়েতনামের ডং-মো লেকের পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে এই মহিলা কাছিমটির সন্ধান পাওয়ার আগে বিজ্ঞানীরা জানতেন এই প্রজাতির আর একটি প্রাণীই জীবিত আছে। সেটি সুজু চিড়িয়াখানার পুরুষ কাছিমটি। তার মৃত্যু হলেই মুছে যাবে আরও একটি প্রজাতি। জলবায়ু পরিবর্তন নয়, এই প্রজাতিটির বিলুপ্তির জন্য দায়ী থাকবে মানুষের শিকারী প্রবৃত্তি। মাংস ও ডিমের লোভে একটি গোটা প্রজাতিকে শেষ করে দিয়েছে মানুষ। তবে এর মধ্যেই গত অক্টোবরে একদল গবেষক এই মহিলা কাছিমটির সন্ধান পান। আর এতদিন ধরে নানা গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত যে এটি ওই একই প্রজাতির কাছিম। শুধু তাই নয়, কাছিমটির সন্তান ধারণার ক্ষমতাও হারিয়ে যায়নি।
মহিলা কাছিমটিকে অবশ্য আবার জঙ্গলেই ছেড়ে দিয়ে আসা হয়েছে। তবে এর মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রজননের পরিকল্পনাও। ভিয়েতনামের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০২১ সালেই দুই জীবিত স্যুইনো কাছিমের মিলন ঘটানো হবে। এর আগে ২০১৯ সালে এমনই একটি প্রজনন প্রক্রিয়ায় মারা গিয়েছিল একটি স্যুইনো কাছিম। তখনই প্রজাতিটির বিলুপ্তি নিশ্চিত হয়ে যায়। তবে এবার আর সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সেই সংকল্পই করছেন বিজ্ঞানীরা। বিপন্ন এই প্রজাতিটিকে বাঁচানোর এমন সুযোগ আর কখনো আসবে না।
Powered by Froala Editor