চিত্রশিল্পীর স্মরণে মেলা, ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বাংলাদেশের গ্রামে

নাম, শেখ মহম্মদ সুলতান ওরফে লাল মিয়াঁ। কিন্তু গোটা পৃথিবীর কাছে তিনি পরিচিত এস এম সুলতান হিসেবে। বাংলাদেশের চিত্রশিল্পের আধুনিকতার অন্যতম পথিকৃৎ ধরা হয় তাঁকে। তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও ‘সুলতান মেলা’ শুরু হয়েছে নড়াইলে। গত ১৬ জানুয়ারি থেকে এস এম সুলতানের গ্রামে শুরু হয়েছে ১২ দিন ব্যাপী এই বিশেষ মেলা।

নড়াইলের গ্রাম্য পরিবেশ থেকে বেড়ে ওঠা তাঁর। সেই মাটির গন্ধই চিরকাল বয়ে নিয়ে চলেছেন নানা জায়গায়। সেই সঙ্গে তাঁর আঁকায় উঠে এসেছে মানুষ। তাঁদের গল্প, তাঁদের শোষণ, নির্যাতন, শক্তি সমস্ত কিছু তুলে ধরেছেন তাঁর ছবিতে। ‘প্রথম বৃক্ষরোপণ’, ‘হত্যাযজ্ঞ’, ‘চরদখল’ এই সমস্ত ছবি যেন সেসবেরই প্রতিফলন। বলতে গেলে, সেই সময়ের বাংলার গ্রামীণ সমাজকে বিশ্বের সামনে নিয়ে এসেছিলেন এস এম সুলতান। বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিলেন আধুনিকতার ছোঁয়া। ১৯৫৬ সালে লন্ডনের প্রদর্শনীতে পাবলো পিকাসো, সালভাদর দালির মতো শিল্পীদের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনিও। তবে শুধু শিল্পকলায় থেমে থাকেননি। নিজের গ্রাম নড়াইল এবং চাচুড়ি পুরুলিয়ায় শিশুশিক্ষার কাজও করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরই নড়াইলে, তাঁর নিজের জায়গায় এই ‘সুলতান মেলা’ শুরু হয়। মেলার অন্যান্য আয়োজন ছাড়াও এস এম সুলতানের কাজের ওপর প্রতিদিন সেমিনার আয়োজিত করা হয়।

শুধুমাত্র একজন শিল্পীকে কেন্দ্র করে, তাঁকে উৎসর্গ করে এরকম মেলার উদাহরণ অন্য কোথাও দেখা যায় কিনা জানা নেই। গোটা বাংলাদেশেই এস এম সুলতানের নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। কিন্তু তাঁর নিজের গ্রাম তাঁকে যে সম্মান দিয়েছে, যে উপহার দিয়েছে, সেটা তো অন্য কোথাও হয়নি। আর এভাবেই বোধহয় একজন শিল্পী অমরত্ব পান।