বয়স মাত্র ৯। অথচ এই সমাজটা যে তারও, সমাজের প্রতি তার দায়বদ্ধতাও কম নয়। হায়দ্রাবাদের বালিকার কাজে অবাক সকলেই। এই বয়সেই তার মন ছুঁয়ে গিয়েছে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করতে থাকা মানুষদের যন্ত্রণা। বিশেষ করে, তার মতো বয়সেই যারা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছে। এই লড়াইয়ে মনোবল বাড়াতে পারে বই। আর তাই ক্যানসার আক্রান্তদের জন্য আস্ত একটি লাইব্রেরি বানিয়ে ফেলেছে হায়াদ্রাবাদের আকর্ষণা সতীশ। এমএনজে ক্যাণসার ইনস্টিটিউটে সেই লাইব্রেরির উদ্বোধন হল সম্প্রতি।
বছরখানেক আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এই লাইব্রেরি তৈরির অনুমতি আনতে যায় আকর্ষণা। সেদিনই অবাক হয়েছিলেন সকলে। তবে অনেকেই ভেবেছিলেন, বাচ্চা মেয়ের হঠাৎ খেয়াল হয়েছে। নিজেই একদিন ভুলে যাবে। না, আকর্ষণা তার পরিকল্পনার কথা ভুলে যায়নি। এই এক বছর ধরে নানা জায়গা থেকে সংগ্রহ করেছে ১০০০-এর বেশি বই। তামিল, হিন্দি, ইংরেজি – নানা ভাষার বই। কোনোটা কোনো বন্ধুর কাছ থেকে জোগাড় করেছে, কোনোটা জোগাড় করেছে আত্মীয়দের কাছ থেকে। আবার নিজের সংগ্রহ থেকেও বেশ কয়েকটা বই সে দিয়েছে লাইব্রেরির জন্য। আকর্ষনার এই নিষ্ঠাকে সম্মান জানিয়ে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছে এমএনজে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষও। ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের জন্য যে খেলার ঘরটা ছিল, সেখানেই জায়গা পেয়েছে হাজারের বেশি বই।
করোনাবিধি মেনেই রীতিমতো জাঁকজমক করে হয়েছে লাইব্রেরি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানও। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হায়াদ্রাবাদের পুলিশ কমিশনার অঞ্জনী কুমার। তিনিও আকর্ষনার এই উদ্বোগে অবাক। নিজের উদ্যোগে একটি সোনার মেডেল তুলে দিয়েছেন আকর্ষণার গলায়। তাঁর কথায়, এই সময় সবাই যখন নিজেদের গণ্ডির মধ্যে গুটিয়ে যাচ্ছেন, তখন আকর্ষণার মতো মেয়েদের ভীষণ দরকার। আর বই তো জীবনের সমস্ত লড়াইয়ের সঙ্গী। মাত্র ৯ বছর বয়সেই আকর্ষণা বুঝতে পেরেছে বইয়ের গুরুত্ব। তার এই উদ্যোগ হয়তো আরও অনেককে বোঝাতে সাহায্য করবে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
প্রতিদিন ১২ কিলোমিটার হেঁটে পাঠকের খিদে মেটাচ্ছেন এই লাইব্রেরিয়ান